বলি, সে আমি জানি। এতক্ষনে স্বস্তি ফিরে আসে ভেতরে। যাক, অন্য কোন মতলব আঁটছে না। সামনাসামনি কথা বলতে চাইছে যখন আপোষের পথই ধরবে। বলি, ঠিক আছে। আমি তাকে বুঝিয়ে বলবো। আশা করি নিয়ে আসতে পারবো।
কখন আনবে?
এখন তো আমি বাইরে যাচ্ছি। সন্ধ্যায় ফিরবো। তখন আনতে পারবো।
কোন কথা না বলে কিছু ভাবতে থাকে। যদিও ভিন্ন মতলব আঁটছে না তারপরও নিশাকে এখানে আনতে হলে একটু প্রস্তুতি নিয়েই আসা উচিত।
আমার দিকে ফিরে বলে, ঠিক আছে, আমি রুমেই থাকবো।
ওকে, তাহলে সন্ধ্যায় আবার আসছি।
কিছু বলে না। আমি ফিরে দরজার নব ঘোড়াই। খুলে বাইরে এসে আবার বলি, কোন বোকামি বা চালাকি কোর না। সন্ধ্যায় এলে ঝামেলাটা মিটিয়ে ফেলো। ওকে? বাই। বলে দরজা টেনে দেই।
লবি ধরে হাঁটতে হাঁটতেই নিশাকে ফোন দেই। ধরেই উদ্বিগ্ন কন্ঠ তার ‘হোয়াট হ্যাপেন্ড? শি গেভ?’
বলি, নট ইয়েট। সে তোমার সাথে সামনাসামনি কথা বলতে চায়।
কেন!
তোমার জিনিষ তো আর একজনের হাতে তুলে দিতে পারে না, তাই না?
তার মানে দিতে রাজী হয়েছে?
বলেনি কিছু। তবে ধারনা করছি সামনাসামনি হলে একটা সিদ্ধান্তে তাকে আসতে হবে। এবং সেটা পজিটিভ হবে বলেই আমার অনুমান।
একটু চুপ থাকে। তারপর বলে, তুমি কি মনে করো তার সামনে যাওয়া উচিত হবে আমার!
অসুবিধা কি?
আমার ভয় করছে। যদি সে আমাকে গুন্ডা দিয়ে কিডন্যাপ করায়! বেশ ভয়ার্ত কন্ঠ ওর।
আশ্বস্ত করতে বলি, ভয় নেই। আমরাও প্রস্তুতি নিয়েই যাবো।
হালকা শ্বাষ ছেড়ে বলে, তুমি যা ভালো মনে করবে তাই করো।
ওকে। আমি বিকেলের মধ্যে ফিরতে পারবো বলে আশা করছি। এসে সন্ধ্যায় তোমাকে নিয়ে যাবো তার ওখানে, এখন রিল্যাক্স করো। সময়মতো লাঞ্চ করে নেয়ার কথা মনে আছে তো?
একটু হেসে বলে, আছে বাবা!
‘দ্যাটস এ গুড গার্ল। বাই।’ বলে ফোন রাখি।
নিশার সাথে কথা বলতে বলতেই এসে যাই চুংকিংয়ে। হেলিমকে মোটামুটি রেডিই পাওয়া যায়। জেনি এখনো এসে পৌছেনি। তাই মেজাজটা তার ফুরফুরে। তারপরও উদ্বিগ্ন কন্ঠে শুধায় কি হলো।
বলি তাকে পুরোটা। শুনে বলে কোন সমস্যা নাই। দরকার হলে পুরো দলেবলে যাওয়া যাবে বিকালে। ডরমিটরির ছেলেগুলো এসে যাবে বিকেলের মধ্যে। সব ক’টাকে নিয়েই যাবো।
তাকে শান্ত করতে বলি, অত কিছু লাগবে না। সে একা গেলেই চলবে। বেশী ভীড়ভাট্টা বাড়ালে একটা সিন হয়ে যাবে। মেয়েঘটিত ব্যপার, ছেলেগুলো অন্য রকম মনে করতে পারে। হেলিম সায় দেয়।
আমরা এখন যাবো ওয়াংচাই। জিয়াংশিকে ফোন দিয়ে জানাই রওনা হচ্ছি। সে বলে অফিসেই আছে। লাঞ্চের কথা মনে করিয়ে দেয়।
হংকং শহরটা মূলত দুই অংশে বিভক্ত। মাঝখানে একটা নদী। ঠিক নদী না, সাগর থেকেই একটা বড় খাল বের হয়ে এসে হংকং দ্বীপটাকে পেচিয়ে আবার সাগরে গিয়ে মিশিছে। এ পারে কাউলুন সাইড। ওপারে হংকং দ্বীপ। ওটাই মূল শহর। বড় বড় দালান কোঠা হাইরাইজ বিল্ডিং স্কাই স্ক্যাপার সরকারি অফিস ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সব হংকং সাইডেই। আমরা থাকি কাউলুন অংশে। আর চুংকিং মিরাডর হায়াত স্পেস মিউজিয়াম কালচারাল সেন্টার কাউলুনের সিম সা সুই এলাকায়। তিনভাবে যাওয়া যায় এখান থেকে হংকং। নদী পথে, সড়ক পথে, পাতাল রেলে। সামনেই স্টার ফেরি। কিছুক্ষন পরপর ছাড়ছে। তবে অল্প সময়ে পৌছুতে সব চেয়ে দ্রæত পরিবহন হচ্ছে পাতাল রেল। স্থানীয় নাম এমটিআর। চুংকিংয়ের উল্টো দিকেই মাটির নীচে স্টেশন। ট্রেন আসছে কয়েক মিনিট পর পর। নদীর তলে সুরঙ্গ বানিয়ে রেল লাইন। এক টানে নদী পার হলেই ওপারে হংকং। বাই রোড গাড়ীতে যেতে অনেক ঘুড়তে হয়। সময় লাগে, খরচাও বেশী।
Disclaimer:
The editorial team is not responsible for the content of the writing.