কথা বলতে বলতে আমরা চলে আসি রুমে। সোফায় বসে একটা বড় শ্বাষ নেই। যাক বাবা ভালোয় ভালোয় সাড়া গেছে। যে ঘাগু মহিলা। বেঁকে বসলে বড় ঝামেলা সামাল দিতে হতো। এখন জিনিষ হাতে এসে গেছে। নেক্সট এভেইলেবল ফ্লাইটেই ওকে উঠিয়ে দেয়া যাবে।
নিশার দিকে তাকিয়ে বলি ‘হ্যাপী?’
হেসে বলে, তুমি না থাকলে আমি জিন্দেগীতেও ওর কাছ থেকে মুক্তি পেতাম না।
হেলিম বলে, তোমার কপাল ভালো যে এই রকম একটা লোকের দেখা পেয়েছিলে।
‘আই নো’ বলে হেলিমের দিকে ফেরে। বলে চলে, ভগবান নিজেই আমার কাছে চলে এসেছে যে!
হেলিম বলে, ভগবানকে কিন্তু কেউ খালি হাতে ফেরায় না। তো বিনিময়ে তুমি এখন কি দিচ্ছো তাকে!
চট করে কিছু বুঝতে পারেনা নিশা। একটু বোকার মতো তাকায়, একবার আমার একবার হেলিমের দিকে। তারপর আমতা আমতা করে বলে, আমি কি দেবো! আমার তো কিছু নাই এখানে!
বুঝতে পারছিলাম হেলিম এখন তার কথায় যাবে। তাড়াতাড়ি বলে উঠি, কি বলেন আপনি! ভগবানকে কি কখনো প্রতিদান দিতে হয়!
এতক্ষনে নিশা বোধহয় কিছুটা আঁচ করলো। হেসে বলে, আমার ভগবান যে কিছুই চায় না।
হেলিম ছাড়েনা এ সুযোগ। সঙ্গে সঙ্গে বলে ওঠে, চাইতে হবে কেন? তোমার একটা দায়িত্ব আছে না!
না:, লোকটা এইবার মানসম্মান সব নষ্ট করবে। তাকে থামিয়ে দিতে বলি, আচ্ছা এসব রাখেন তো এখন। রউফ সাহেব বসে আছে না!
যেন হুশ হয় হেলিমের। বলে, ও তাই তো! নিশার দিকে ফিরে বলে, শোন তোমার এই বিজয়টাকে আমরা সেলিব্রেট করবো এখন।
নিশা একটু বোকার মতো তাকিয়ে বলে, কিসের বিজয়?
বিজয় না! মহিলার কাছ থেকে এই যে পাসপোর্ট টিকেট পাওয়া গেলো। জানো তোমার ভগবান কি টেনশনে ছিলো এ নিয়ে!
আমি জানি। বলে তাকায় আমার দিকে নিশা।
হেলিম বলে চলে, শোন, আমাদের আর এক বন্ধু আজ সবাইকে ডিনারের দাওয়াত দিয়েছে। সেলিব্রেশনটা সেখানেই হয়ে যাক।
নিশা একটু ইতস্তত: করে শুধায়, আমিও?
এবার আমি বুঝিয়ে বলি ব্যপারটা। বলি, আসলে প্রগ্রাম কালকেই বানানো। দিনে ওকে জানানো হয় নাই সন্ধ্যায় কি দাঁড়ায় অবস্থাটা দেখার জন্য। এখন ভালোয় ভালোয় কাজ উদ্ধার হয়ে গেছে। দুই একদিনের মধ্যে ও চলে গেলে আর তো দেখা হবে না। তাই সবাই মিলে এক সাথে একটু খাওয়া দাওয়া করা।
তারপরও একটু ইতস্তত: করতে থাকে নিশা। মৃদু হেসে গলাটা নীচু করে বলি, তোমার কি ভয় করছে বাইরে যেতে?
ত্রস্তে বলে ওঠে, তুমি তো সঙ্গে থাকছো। তাহলে ভয় করবে কেন!
আমিও হেসে বলি, তাহলে রেডি হয়ে নাও। আমরা কি বাইরে গিয়ে বসবো কিছুক্ষন?
কেন?
তুমি চেঞ্জ করে নাও এর মধ্যে।
সেটা আমি বাথরুমে গিয়েও করতে পারবো। তোমরা আমাকে অল্প কয়েক মিনিট সময় দাও। বলে ব্যাগ খুলে প্যান্ট শার্ট নিয়ে বাথরুমে যায়।
হেলিম এবার গলাটা একটু নীচু করে খাস বাংলায় বলে, ভাই, এই জিনিষ ছাইড়েন না। সারা জীবন পস্তাইবেন।
আমি তার কথার জবাব না দিয়ে বলি, এখন রউফ সাহেবকে কল দেন। বলেন চুংকিংয়ের সামনে এসে দাঁড়াতে। আমরা দশ পনেরো মিনিটের মধ্যে সেখানে যাচ্ছি।
‘ওকে ওকে’ বলে হেলিম ফোনের বোতাম টেপে। সঙ্গে সঙ্গেই ধরেন রউফ সাহেব। যেন অপেক্ষায়ই ছিলেন। হেলিম জানায় অপারশেন সাকসেসফুল। এখন সে আমার রুমে। এখনই বের হবো। মিনিট দশেকের মধ্যে চুংকিংয়ের সামনে গিয়ে পৌঁছুতে পারবো। সে যেন এসে দাঁড়ায় সেখানে।
Disclaimer:
The editorial team is not responsible for the content of the writing.