বয়স মাত্র ১১ পেরিয়েছে। এখনও পঞ্চম শ্রেণির পাঠ শেষ হয়নি। সারাক্ষণ ঘর আলো করে রাখা এই সন্তান চলে গেলেন জ্বরে আক্রান্ত হয়ে। সাবেক ক্রিকেটার সাজ্জাদ আহমেদ শিপনের বড় ছেলে শায়ান আহমেদ শুদ্ধ শুক্রবার (১৫ জুলাই) দুপুরে হঠাৎ করে বাবার কোলেই না ফেরার দেশে চলে যান। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময়ও পাননি সাজ্জাদ।
শুদ্ধর মৃত্যুর কথা নিশ্চিত করেছেন তার বন্ধু আম্পায়ার মাসুদুর রহমান মুকুল। তার সঙ্গে যখন মুঠোফোনে কথা হচ্ছিল তখন তিনি মানিকগঞ্জের পথে। শুদ্ধকে সেখানে দাফন করা হবে, তাই সেখানে যাচ্ছেন মুকুল।
কীভাবে মৃত্যু হলো মাত্র ১১ বছর বয়সী শুদ্ধর? জানতে চাইলে মুকুলের কণ্ঠে শুধু হাহাকার। তিনি বলেন, ‘তিন দিন ধরে জ্বর ছিল। আজকে সাপোজিটার দেওয়া হয়, একটু ভালোর দিকেই ছিল। আজ দুপুরে বাথরুম থেকে এসে শুদ্ধ জানায় বাবা আমার খারাপ লাগছে, এ কথা বলেই বাবার কোলেই পড়ে যায়। আর জেগে উঠেনি।’
ছেলের এমন অবস্থা দেখে হতবিহ্বল বাবা সাজ্জাদ দ্রুত উবার ডাকেন। কিন্তু আসতে দেরি করায় সিএনজি নিয়েই ছুটেন হাসপাতালের পথে। কিন্তু তার আগেইতো সব শেষ হয়ে যায়। বাবা সাজ্জাদ এক হাসাপাতাল ঘুরে আরও নিশ্চয়তার জন্য নিয়ে আসেন স্কয়ার হাসপাতালে। কিন্তু সেখান থেকেও তাকে ফিরতে হয় ছেলের লাশ নিয়েই।
জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার পর চিকিৎসক দেখানো হয়েছিল। আরও কয়েকদিন দেখার কথা বলেছিলেন চিকিৎসক। কোনও ধরনের টেস্ট করা হয়নি। তবে তারা ধারণা করেছেন ডেঙ্গু হতে পারে।
সাজ্জাদের গ্রামের বাড়ি ফরিদপুর। কিন্তু শুদ্ধকে দাফন করা হচ্ছে মানিকগঞ্জ তার স্ত্রীর বাড়িতে। সেখানে তাদের পারিবারিক কবরস্থান। শুদ্ধর কবর স্থায়ীভাবে রেখে দিতে চান বাবা সাজ্জাদ। তাই মানিকগঞ্জে দাফন করা হচ্ছে।
সাজ্জাদ বাংলাদেশের হয়ে দুটি ওয়ানডে খেলেছেন। অভিষেক হয় ১৯৯৫ সালে ভারতের বিপক্ষে শারজাহতে। একই বছর শারজাহতেই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে খেলেন শেষ ম্যাচ। এ ছাড়া ৩৩টি প্রথম শ্রেণি এবং ৩৯টি লিস্ট এ ম্যাচ খেলেন। বর্তমানে তিনি বিসিবির বয়সভিত্তিক নির্বাচক হিসেবে কাজ করছেন।