গত মাসে যুক্তরাষ্ট্রের ওহাইও পুলিশের গুলিতে নিহত হয় ২৫ বছর বয়সী কৃষ্ণাঙ্গ যুবক জেল্যান্ড ওয়াকার। ময়নাতদন্তে তার শরীরে ৪৬টি বন্দুকের গুলির আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে।
চিকিৎসক জানিয়েছেন, কোন গুলিটি জেল্যান্ড ওয়াকারকে হত্যা করেছে বা মোট কতটি গুলি করা হয়েছে তা জানা অসম্ভব।
আকরন শহরে ওয়াকারের মৃত্যুতে শত শত মানুষ শোক র্যালি করার দুদিন পরে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়েছে। ওয়াকারের নিহতের ঘটনায় প্রায় প্রতিদিন আকরন শহরে বিক্ষোভ হওয়ায় শুক্রবার রাতে সেখানে কারফিউ জারি করা হয়েছে।
মেডিকেল পরীক্ষক জানিয়েছেন ২৭ জুন আকরন শহরে ওয়াকারকে যখন গুলি করা হয় তখন সে তার হৃৎপিণ্ড, ফুসফুস ও ধমনীতে গুরুতর আঘাত পেয়েছিল।
ছোটখাটো নিয়ম লঙ্ঘনের জন্য ওয়াকারকে একটি ট্রাফিক স্টপেজে থামানোর চেষ্টা হয়। পরবর্তীতে এই চেষ্টা ছয় মিনিটের ধাওয়ায় গিয়ে শেষ হয়।
পুলিশের বডি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা গেছে, স্কি মাস্ক পরা ওয়াকার চলন্ত গাড়ি থেকে লাফ দিয়ে বের হয়ে একটি পার্কিং লটে ঢুকে পড়ে। সেখানে পুলিশ একাধিক দিক থেকে তার ওপর গুলি চালায়। পুলিশের দাবি, গুলি করার আগে ওয়াকার ‘হুমকিপূর্ণ অঙ্গভঙ্গি’ করেছিল। তবে পুলিশের বডি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ এতোটাই অস্পষ্ট যে, তাদের বক্তব্যের সত্যতা যাচাই করা কঠিন।
পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, ওয়াকার ওই সময় নিরস্ত্র ছিলেন এবং তাকে হত্যা করার কোনো প্রয়োজন ছিল না।
পুলিশের দাবি, ওয়াকারের গাড়ির চালকের আসনে একটি আনলোড করা হ্যান্ডগান, গোলাবারুদের একটি ক্লিপ এবং একটি বিয়ের ব্যান্ড পাওয়া গেছে।
প্রাথমিক অনুসন্ধানে ওয়াকারের শরীরে ৬০টিরও বেশি ক্ষত দেখা গেছে।
সামিট কাউন্টির চিকিৎসক ডা. লিসা কোহলার বলেছেন, এটি ‘খুবই সম্ভব’ যে একটি বুলেট একাধিক ক্ষত সৃষ্টি করতে পারে।
গুলির ঘটনায় জড়িত আট পুলিশ কর্মকর্তা মধ্যে সাতজন শেতাঙ্গ এবং একজন কৃষ্ণাঙ্গ, তাদেরকে তদন্তের জন্য ছুটিতে পাঠানো হয়েছে।
স্থানীয় পুলিশ ইউনিয়ন জানিয়েছে, তারা বিশ্বাস করে যে পুলিশ কর্মকর্তারা ভেবেছিল তারা গুরুতর ক্ষতির ঝুঁকিতে রয়েছে এবং তাদের প্রশিক্ষণের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ কাজ করেছে।
নাগরিক অধিকার সংস্থা ন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য অ্যাডভান্সমেন্ট অব কালারড পিপল মার্কিন অ্যাটর্নি জেনারেল মেরিক গারল্যান্ডের কাছে এই ঘটনার একটি ফেডারেল তদন্ত শুরুর জন্য এবং কর্মকর্তাদের জবাবদিহি করার জন্য আবেদন করেছে।