শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন রনিল বিক্রমসিংহে। বুধবার (২০ জুলাই) দেশটির পার্লামেন্টের স্পিকার এক বার্তায় এমন কথা জানান।
সংবাদ মাধ্যম ডেইলি মিরর জানায়, পার্লামেন্টে অনুষ্ঠিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রনিল বিক্রমাসিংহে পেয়েছেন ১৩৪ ভোট। তার নিকটতম প্রার্থী দুল্লাস আলাহাপ্পেরুমে পেয়েছেন ৮২ ভোট। মাত্র তিন ভোট পেয়েছেন অনুরা কুমারা দিসানায়েক।
২ কোটি ২০ লাখ জনসংখ্যার দ্বীপ রাষ্ট্র শ্রীলঙ্কা ১৯৪৮ যুক্তরাজ্য থেকে স্বাধীনতার লাভের পর সবচেয়ে কষ্টদায়ক অর্থনৈতিক দুরবস্থায় পড়েছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের তীব্র ঘাটতি দেখা দিয়েছে। একই সঙ্গে দ্রব্যমূল্য ব্যাপকভাবে বেড়ে গেছে। এছাড়া বিদ্যুতের ঘাটতি চরমে পৌঁছেছে। বিদেশি মুদ্রার অভাবে শ্রীলঙ্কা বিদেশ থেকে গুরুত্বপূর্ণ পণ্য আমদানি করতে পারছে না। দাম পরিশোধ করতে না পারায় জীবন রক্ষাকারী ওষুধ থেকে শুরু করে সিমেন্ট পর্যন্ত সব গুরুত্বপূর্ণ পণ্যের ভয়াবহ সঙ্কট তৈরি হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে শ্রীলঙ্কায় গোতাবায়া রাজাপাকসের গঠন করা সরকার পতনের আন্দোলন শুরু হয়। আন্দোলন সহিংসতার পর্যায়ে পৌঁছালে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে।
কিন্তু আন্দোলনকারীরা প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন করতে থাকেন। এরই মধ্যে শনিবার (৯ জুলাই) আন্দোলনকারীরা প্রেসিডেন্টে ও প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে হামলা চালায়। আন্দোলনকারীদের কাছ থেকে বাঁচতে সে সময় প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে প্রেসিডেন্ট বাসভবন থেকে পালিয়ে নৌবাহিনীর একটি ঘাঁটিতে আশ্রয় নেন। সেখান থেকে মঙ্গলবার (১২ জুলাই) রাতে শ্রীলঙ্কার একটি সামরিক বিমানে পরিবার নিয়ে মালদ্বীপে পালিয়ে যান তিনি।
সিঙ্গাপুরে অবস্থান করার সময় গোতাবায়া রাজাপাকসে পদত্যাগ করেন। সে সময় ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমসিংহকে নিয়োগ দেওয়া হয়।
এরই মধ্যে মঙ্গলবার প্রেসেডেন্ট নির্বাচনের জন্য প্রার্থীদের কাছ থেকে মনোনয়নপত্র চান স্পিকার। এরই প্রেক্ষিতে তিন জন প্রার্থীকে নিয়ে বুধবার (২০ জুলাই) পার্লামেন্টে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এতে দেশটির এমপিদের অধিকাংশ রনিল বিক্রমসিংহেকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত করেন।