বিয়ের আয়োজন রাঙিয়ে তুলতে, স্মৃতিময় করে রাখতে মানুষের চেষ্টার কমতি থাকে না। সাধ্য অনুযায়ী সবাই এই আয়োজনে পূর্ণতা প্রত্যাশা করেন। এরপর বাসর ঘর, মধুচন্দ্রিমা মানেই বর-কনের কাছে বিশেষ কিছু। এ জন্য কেউ বেছে নেন পাঁচতারকা হোটেল, কেউ দেশের বাইরে বিখ্যাত কোনো স্থান।
হালিম মিয়া বাসর ঘরের জন্য বেছে নিয়েছেন বাড়ির পাশের ছোট্ট পুকুর। সেখানে অস্থায়ী ঘর নির্মাণ করে তিনি বাসর ঘর করে শখ পূরণ করেছেন। ঘটনাটি ঘটেছে দেশের সীমান্তবর্তী জেলা শেরপুরে। বলা যায়, পানির ওপর বাসর ঘর তৈরি করে এলাকায় সাড়া ফেলেছেন তিনি।
শেরপুর সদরের সাতানীপাড়ার হালিম মিয়া (২৫) পেশায় শ্রমিক। ঝালাই কারখানায় কাজ করেন। বাবা আব্দুল হামিদ ও মা চম্পা বেগমের ৯ ছেলেমেয়ের মধ্যে সবার ছোট হালিম মিয়া ছেলেবেলা থেকেই সৃজনশীল। বিয়ে ঠিক হওয়ার পর থেকেই তিনি চিন্তা করতে থাকেন কীভাবে এই আয়োজনটিকে ব্যতিক্রম করা যায়। সেই ভাবনা থেকেই তিনি মধ্যপুকুরে বাঁশের ঘর তুলে সেখানে বাসর ঘর করার সিদ্ধান্ত নেন।
শুক্রবার (২২ জুলাই) হালিম মিয়ার বিয়ে সম্পন্ন হয়। এ সময় তার ব্যতিক্রমী আয়োজন দেখে বাড়ির অতিথিরা চমৎকৃত হন। মুখে মুখে বিষয়টি ছড়িয়ে পড়লে আশপাশের গ্রাম থেকেও মানুষ হালিম মিয়ার বাসর ঘর দেখতে ভিড় করেন।
হালিম মিয়া বলেন, বিয়ের কথা পাকা হওয়ার পর থেকেই মাথায় ভাবনা ছিল আলাদা কিছু করার। এরপর আমার চাচা ও নানারা মিলে শুরু করি বাসর ঘর করার পরিকল্পনা। তারপর গত কয়েক দিন চেষ্টার পর পানির ওপর বাসর ঘরটি তৈরি করা হয়েছে।
হালিমের চাচা রোকন সরকার বলেন, আমরা যখন এই সিদ্ধান্ত নেই তখন সবাই শুনে খুব হাসাহাসি করেছে। মুরুব্বিরা প্রথমে রাজি হয় নাই। কিন্তু ভাতিজার শখ যেহেতু তখন কেউ আর না করেনি। এখন তো এলাকার সবাই জেনে গেছে। দলবেঁধে দেখতে আসছে।
বাজিতখিলা থেকে বাসর ঘর দেখতে এসেছেন জুয়েল মন্ডল। তিনি বলেন, এমন কথা কখনও শুনি নাই, দেখিও নাই। তাই দেখতে এসেছি। একই মন্তব্য করেন চর শেরপুর এলাকার ফকির মিয়া। তিনি বলেন, ষাট বছর পার করলাম, জীবনে অনেক ধরনের বাসর ঘর দেখেছি কিন্ত পানির ওপর বাসর ঘর দেখিনি।