ওয়াশিংটন ডিসি : ১৯৫২’র মহান ভাষা আন্দোলনের ভাষা সৈনিকদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা অর্পণের মধ্য দিয়ে ওয়াশিংটনস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসে “শহিদ দিবস” এবং “আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস” উদ্যাপিত হয়েছে। ’৫২-র ২১ শে ফেব্রুয়ারিতে বরকত, সালাম, রফিক, জব্বার, শফিকসহ অনেকে সেদিন ঢাকার রাজপথে বুকের রক্ত ঢেলে দিয়ে বাংলাকে তদানীন্তন পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ সরকারের প্রচেষ্টায় ১৯৯৯ সালের ১৭ই নভেম্বর ইউনেস্কো ২১ শে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা দেয়।
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশসহ ১১টি দেশের শিল্পীবৃন্দ দূতাবাসের বঙ্গবন্ধু অডিটরিয়ামে সঙ্গীত ও নৃত্য পরিবেশন করেন। দেশগুলো হচ্ছেঃ- বাংলাদেশ, যুক্তরাষ্ট্র, আফগানিস্তান, কলম্বিয়া, রাশিয়া, নেপাল, ভারত, থাইল্যান্ড, প্যারাগুয়ে, ইউক্রেন এবং শ্রীলংকা। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশী ক‚টনীতিক মাহবুব হাসান সালেহ-এর লেখা একুশের কবিতা “একুশ আমার” আবৃত্তি করেন মার্কিন ক‚টনীতিক ড্যানিয়েল বাকম্যান।
বিভিন্ন দেশের ক‚টনীতিবৃন্দ, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, সাংবাদিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্রতিনিধিবৃন্দ এবং প্রবাসী বাংলাদেশীরা অনুষ্ঠানটিতে অংশ নেন। “শহিদ দিবস” উপলক্ষে দূতাবাসের কর্মকর্তা/কর্মচারীবৃন্দ রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন-এর নেতৃত্বে ২১ শে’র প্রথম প্রহরে শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন এবং শহীদদের স্মরণে কিছুক্ষণ নীরবতা পালন করেন।
সকালে রাষ্ট্রদূত জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করেন এবং বঙ্গবন্ধুর আবক্ষ মূর্তিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। দূতাবাসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ এতে অংশ নেন। পরবর্তীতে মহামান্য রাষ্ট্রপতি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, মাননীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রী এবং মাননীয় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ করা হয়। ভাষা শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
অপরাহ্নে ওয়াশিংটন ডি.সি’র সেক্রেটারী অব স্টেট কিমবারলে ব্যাসেট দূতাবাস প্রাঙ্গণে নবনির্মিত শহীদ মিনারের উদ্বোধন এবং পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। রাষ্ট্রদূত জিয়াউদ্দিন বলেন, যেহেতু বাংলাদেশ ২১ শে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেব্ েইউনেস্কোর স্বীকৃতি আদায়ে মুখ্য ভ‚মিকা পালন করছে সেহেতু বাংলাদেশকে শুধু বাংলা ভাষাই নয় পৃথিবীর অন্য ভাষা গুলোকেও সংরক্ষণের পবিত্র দায়িত্ব পালন করতে হবে।
রাষ্ট্রদূত বলেন, অন্য ভাষার প্রতি সম্মান প্রদর্শনের মাধ্যমে পারস্পরিক সমঝোতা, সহানুভ‚তি এবং সংলাপের ভিত্তিতে আন্তর্জাতিক সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বৃদ্ধি পেতে পারে।