মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেছেন, ‘বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব শুধু সার্থক নারীই ছিলেন না, তিনি সার্থক দেশপ্রেমিক। তিনি ছিলেন সার্থক মা, সার্থক স্ত্রী। তিনি দেশের জন্য অসামান্য অবদান রাখা মহিয়সী ব্যক্তিত্ব ছিলেন। তার কাছ থেকে আমাদের শিখতে হবে। ব্যক্তিজীবনে ও রাজনীতিতে বঙ্গমাতাকে স্মরণের মধ্য দিয়ে আমরা উপকৃত হতে পারি, শিক্ষা নিতে পারি।’
সোমবার (৮ আগস্ট) বিকেলে রাজধানীর মৎস্য ভবনে মৎস্য অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবের ৯২তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে এ আয়োজন করে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়।
মন্ত্রী বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শেখ মুজিব থেকে বঙ্গবন্ধু হয়ে ওঠার পেছনে অনবদ্য অবদান রেখেছিলেন বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব। তিনি অনুপ্রেরণা, ভালোবাসা, শক্তি ও সাহস দিয়ে বঙ্গবন্ধুকে সামনে এগিয়ে নিয়ে গেছেন। বঙ্গবন্ধু হিসেবে অর্জনের জায়গায় পৌঁছে দিয়েছেন।’
মন্ত্রী যোগ করেন, ‘রাষ্ট্রপতির স্ত্রী হিসেবে বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব কখনই বিত্ত-বৈভবে আকৃষ্ট ছিলেন না। তিনি সন্তানদেরও কখনো বিত্ত-বৈভবের দিকে প্ররোচিত করেননি। এর মধ্য দিয়ে তার সততা, দেশপ্রেম ও আদর্শিক জায়গা প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। তিনি মুক্তিযুদ্ধের সময় বীরাঙ্গনাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট নিজের জীবন উৎসর্গ করে জাতির জনককে বাঁচাতে চেয়েছিলেন। তার হৃদয়ের বিশালতা, দৃঢ়চেতা মানসিকতা ও আত্মোৎসর্গের জায়গা ছিল অসাধারণ।’
শ ম রেজাউল করিম আরও বলেন, ‘সমকালীন ইতিহাসের বিপ্লবী নেতা বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিণী হয়েও বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব আড়ালে থাকা প্রচারবিমুখ মানুষ ছিলেন। তিনি অতি সাধারণ জীবনযাপন করতেন। তিনি ছিলেন স্বল্পভাষী। কিন্তু, তিনি ছিলেন অসীম সাহস ও দৃঢ় মানসিক শক্তির মানুষ। তাকে কখনো নতজানু করা যায়নি। বঙ্গবন্ধু কারাগারে থাকার সময় নিশ্চিত মৃত্যুর মুখোমুখি হয়েও তিনি দুই ছেলেকে মুক্তিযুদ্ধে পাঠিয়েছেন। বঙ্গমাতা এতটাই দৃঢ়চেতা, আত্মবিশ্বাসী ও সাহসী মানুষ ছিলেন। তিনি দেশের জন্য যে কাজ করেছেন তা সামনে থাকা অনেক মানুষও করতে পারে না।’
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব শ্যামল চন্দ্র কর্মকারের সভাপতিত্বে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মুহাম্মদ ইয়ামিন চৌধুরী। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. তৌফিকুল আরিফ, এ টি এম মোস্তফা কামাল ও মো. আব্দুল কাইয়ূম, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ তথ্য দপ্তরের উপ-পরিচালক মো. শেফাউল করিম, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. মনজুর মোহাম্মদ শাহজাদা, মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খ. মাহবুবুল হক, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. মনজুর মোহাম্মদ শাহজাদা, বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. মনজুর হাসান ভুঁইয়াসহ মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় ও আওতাধীন দপ্তর-সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
আলোচনা সভা শেষে বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবসহ বঙ্গবন্ধুর পরিবারের সদস্যদের স্মরণে দোয়া করা হয়।