আমি মাথা নেড়ে বলি, সে আমি বুঝতে পেরেছি। তবে আর কোন ছেলের কাছে কিন্তু মনের কোন ইচ্ছা ওভাবে প্রকাশ কোর না। নির্ঘাৎ তার ষ্ট্রোক করে বসবে। এবার একটু নড়েচরে বসে বলি, শোন অবশ্যই তুমি আমার সাথে থাকতে পারবে যে ক’দিন চাও। এবং তোমাকে আমি ঘুড়ে দেখাবোও যতটা সম্ভব। তবে আমি এখনও শিওর না নিজে কতদিন আছি এখানে।
চোখ তুলে তাকায়। একটা সিগারেট ধরাই। বলে চলি, কোরিয়া থেকে ফোন এলে বলতে পারবো কবে যেতে হবে সেখানে।
শুধায়, কবে ফোন আসবে?
যে কোন মূহুর্তে।
একটু ভেবে বলে, ঠিক আছে। আগে তোমার কোরিয়ার প্রগ্রামটা ঠিক হোক। তারপর আমার যাওয়ার দিন ঠিক করবো, ওকে?
ওকে। সাউন্ডস গুড।
কাল রাতে পাসপোর্ট টিকেট পাওয়ার পর থেকেই মনের গহীনে কোথায় যেন একটা বিচ্ছেদের সুর বেজে চলছিলো। মাঝে মাঝে ওর চলে যাওয়ার কথা মনে উঠলে কেমন বিষন্ন বোধ হচ্ছিলো। কিন্তু এখন হঠাৎ করেই কেন যেন মনটা লাফিয়ে উঠলো। ও সহসাই যাচ্ছে না। থাকছে আরো কয়েকটা দিন। এক ধরনের ভালোলাগাবোধ মনটাকে আপ্লুত করে তুললো।
হঠাৎ মনে হয়, এভাবে থেকে গেলে ওর বাড়ীতে না কোন সমস্যা হয়। বলি, আচ্ছা তুমি যে আরো কয়েকটা দিন থাকতে চাইছো, তোমার বাড়ীতে কোন অসুবিধা হবে না? চিন্তা করবে না তারা!
বাড়ীর কথা তোলায় হঠাৎ যেন মুখটায় অন্ধকার নেমে এলো। বিষন্ন কন্ঠে বলে, এসেছি থেকে মাত্র একদিন কথা বলতে পেরেছি বাসায়, যেদিন এসে পৌঁছেছি। আন্টি গেস্ট হাউজের ফোন থেকে লাইন লাগিয়ে দিয়েছিলো। শুধু ভালোমতো এসে পৌঁছার খবরটা দিতে পেরেছি। তারপর থেকে তো চললো যুদ্ধ। ভুলেই গেছিলাম বাড়ীর কথা।
বলি, কিন্তু গত দু’দিন ধরে তো তুমি আমার এখানে। আমাকে বললে না কেন!
হেসে বলে, আসলেই তো! এ দু’দিন তাদের কথা মনে পরলো না কেন একবারও! তাকাই গভীর দৃস্টিতে। মিস্টি হেসে বলে, হয়তো তুমি আছো সাথে সেই কারনে।
একটু সহজ হয়ে এসেছিলাম। মনে হলো আবার এলামেলো করে দিতে চাইছে। না, সে ফাঁদে পা দেয়া ঠিক হবে না। বলি, বলছি দেরী করে ফিরলে তারা কোন চিন্তা করবে না!
তারা চিন্তা করবে কেন। তারা তো জানেই আমি এসেছি এখানে কাজ করতে। এবং এখন পর্যন্ত জানে আমি কাজই করে চলেছি। মাঝখানের এতসব খবর তো তারা জানে না। আমি গিয়ে বললে তবে জানবে। কাজেই আমার বাসার জন্য তোমাকে চিন্তা না করলেও চলবে।
তারপরও, এর মধ্যে কথা বলা উচিত ছিলো। ওকে দেন, তো এখন কি তুমি বাসায় কথা বলতে চাও?
বেশ অবাকই হয়। বলে, আমি এখন চেন্নাই কথা বলতে পারবো!
কেন পারবে না!
এখান থেকে?
হ্যাঁ, আমার ফোন থেকে লাগিয়ে দিলে এখনই কথা বলতে পারবে।
কি বলছো তুমি! এত সহজ!
তোমার আগেই বলা উচিত ছিলো। এখন নম্বর বলো।
বলে সেল ফোনটা নিয়ে আসি টেবিল থেকে। প্রিপেইড ফোন, ইন্টারন্যাশনাল আছে। তবে সরসারি করলে পয়সা বেশী কাটে। এখানে বিদেশীরা বাইরে ফোন করতে সবাই কার্ডই ব্যবহার করে। পকেটে কার্ড ছিলো, বের করে পিন নম্বর টিপি। বলি এবার এরিয়া কোডসহ নম্বর বলো। নিশা বেশ অবাক হয়ে দেখছিলো। ত্রস্তে নম্বর বলে। আমি টিপে কানে ঠেকাই। রিং বেজে উঠলে দেই ওর হাতে। বলি, নাও এখন কথা বলো। তবে এখানে যা যা হলো সেসব কিছু বলো না।
Disclaimer:
The editorial team is not responsible for the content of the writing.