আশা জাগিয়েও ছোঁয়া হলো না মাইলস্টোন। যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীর জন্য জোরদার লড়াই করেও শেষ হাসি হাসতে পারলেন না ঋষি সুনাক। কনজারভেটিভ দলের নেতারা ভরসা রাখলেন ব্রিটিশ নেত্রী লিজ ট্রাসের ওপর। কিন্তু কেন? এত লড়াই করেও কেন যুক্তরাজ্যের কুরসিতে বসা হলো না তার?
প্রথম থেকে জোর লড়াই করেছিলেন ইনফোসিসের সহ-প্রতিষ্ঠাতা নারায়ণ মূর্তির জামাই ঋষি সুনাক। বহু পোড়খাওয়া সাদা চামড়ার রাজনীতিবিদকে পেছনে ফেলেছিলেন তিনি। কিন্তু শেষ দফায় এসে অনেকটাই পিছিয়ে পড়েন তিনি। রাজনৈতিক মহল বলছে, এর অন্যতম কারণ তার স্ত্রী অক্ষতাকে ঘিরে চলতে থাকা বিতর্ক।
কথায় বলে পতির পূণ্যে স্বর্গলাভ। ঋষি সুনাকের ক্ষেত্রে কিন্তু পত্নীভাগ্যে বিতর্ক লাভ হয়েছিল। একদিকে বিপুল সম্পত্তি, তো অন্যদিকে আয়কর ফাঁকি, আবার রাশিয়ার সাথে বিশেষ সম্পর্কের জেরে তদন্তের আওতায় চলে আসেন পেশায় ফ্যাশন ডিজাইনার অক্ষতা। পেশার কারণে অন্যান্য দেশ থেকে ব্রিটেনে আসা নাগরিকদের বিশেষ কর দিতে হয়। ঋষি সুনাকের স্ত্রীর বিরুদ্ধে ওই কর ফাঁকির অভিযোগ রয়েছে। তিনি নাকি প্রভাব খাটিয়ে ওই করের আওতার বাইরে চলে আসেন। বলা হয়ে থাকে, অক্ষতার সম্পত্তি নাকি ব্রিটেনের রাণি এলিজাবেথের চেয়েও বেশি। এই বিতর্কের আঁচ আসে সুনাকের গায়েও।
অভিযোগ, যুক্তরাজ্যের অর্থসচিবের হওয়ার আগে সুনাকের নামে থাকা সংস্থার কিছু শেয়ার অক্ষতার নামে স্থানান্তরিত হয়। ইনফোসিসের দফতর রয়েছে রাশিয়াতেও। ফলে মস্কোর সাথে অক্ষতার বিশেষ সম্পর্কের অভিযোগ ওঠে। বিশেষ করে ইউক্রেন-রাশিয়ার দ্বন্দ্বের মাঝে ব্রিটেনের সাথে মস্কোর সম্পর্কের অবনতি হয়। এমন পরিস্থিতিতে রাশিয়ার সাথে অক্ষতার সম্পর্ক প্রভাব ফেলে প্রধানমন্ত্রিত্বের দৌড়ে থাকা সুনাকের ভাবমূর্তিতে।
তবে সমস্ত দোষ যে অক্ষতার তা বললে ভুল করা হবে। অর্থসচিব হিসেবে সুনাকের পারফরম্যান্সে খুশি নয় কনজারভেটিভ দলের সদস্যরাই। তার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ রয়েছে। এক সমীক্ষা বলছে, সুনাকের করনীতি না পছন্দ ছিল ৮ শতাংশ সদস্যের। আবার ৫ শতাংশ সদস্য বলেছেন সহজে তার কাছে পৌঁছানো যেত না। ‘ডিপ্রাইভড আরবান এরিয়াস’-এর তহবিলের অর্থ কেন্ট কমিউটারস বেল্ট প্রকল্পে ঢালার পরামর্শ দিয়েছিলেন সুনাক। যা আদতে পছন্দ হয়নি দলের একাংশের।
আবার কেউ কেউ মনে করেন, নিজের স্বার্থে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের পেছন থেকে ছুরি মেরেছিলেন। বরিসকে ইস্তফা দিতে কার্যত বাধ্য করেছিলেন সুনাক বলেও অভিযোগ। আর এসব কারণেই সুনাকের ঠোঁট আর কাপের মধ্যে পার্থক্যটা রয়েই গেলো।