বিয়েতে দেনমোহর হিসেবে টাকা বা স্বর্ণালঙ্কার নয়, হবু স্ত্রী সান্তনা খাতুন চেয়েছিলেন তার প্রিয় ১০১টি বই। সান্তনার ধরিয়ে দেয়া ১০১টি বইয়ের মধ্যে গত এক সপ্তাহে হবু বর নিখিল নওশাদ সংগ্রহ করতে পেরেছেন ৭০টি।
শুক্রবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় ১০টি নগদ এবং ৯১টি বই বাকি রেখে বিয়ে করেন নিখিল নওশাদ-সান্তনা খাতুন যুগল। বিয়েতে দেনমোহর হিসেব ব্যতিক্রম এমন দৃষ্টান্ত স্থাপন করায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ সর্বত্র প্রশংসায় ভাসছেন তারা।
জানা যায়, গত এক দশক ধরে নিখিল নওশাদ কবিতা লিখছেন। কবিতার মাধ্যমেই সান্তনার সঙ্গে তার পরিচয়। এরপর একে অপরকে ভালোলাগা, তারপর ভালোবাসা, পরে বিয়ে।
নিখিলের বাড়ি বগুড়ার ধুনট উপজেলার গোসাইবাড়ি ইউনিয়নের সাতরাস্তা গ্রামে। সান্তনা সোনাতলা উপজেলার কামালেরপাড়া গ্রামে মোস্তাফিজুর রহমানের মেয়ে। দুজনই পড়াশোনা করেছেন বগুড়ার সরকারি আজিজুল হক কলেজে। নিখিল স্নাতক শেষ করেছেন। আর সান্তনা ইংরেজি সাহিত্যে স্নাতক করছেন।
নিখিল ‘বিরোধ’ নামের একটি ছোট কাগজের সম্পাদক। পাশাপাশি বেসরকারি একটি কোম্পানির বিক্রয় কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করছেন। সান্তনা বগুড়া শহরের উত্তর চেলোপাড়া দাখিল মাদ্রাসায় ইংরেজি শিক্ষক হিসেবে কর্মরত আছেন।
নিখিল নওশাদ বলেন, ‘কবিতার সূত্র ধরেই সান্তনার সঙ্গে পরিচয়। এরপর একে অপরকে ভালোলাগা, তারপর ভালোবাসা। প্রায় এক বছরের সম্পর্ক আমাদের।’
তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি দুজনে বিয়ের সিদ্ধান্ত নিলে সান্তনা দেনমোহর হিসেবে তার প্রিয় ১০১টি বই চায়। গত এক সপ্তাহে ঢাকা ও বগুড়ার বিভিন্ন বইয়ের দোকান থেকে ৭০টি বই সংগ্রহ করি। তবে সবগুলো দেনমোহর হিসেবে যোগ হবে না। বাছাই করে কিছু বই বাদ দেওয়া হবে। বাকিগুলো পরে শোধ করা হবে।’
নিখিল আরো বলেন, ‘দেনমোহর হিসেবে বই দেওয়ার বিষয়টি জানার পর কাজী বিয়ে রেজিস্ট্রি করতে রাজি হননি। পরবর্তীতে গোসাইবাড়ির কাজী অফিস থেকে রেজিস্ট্রি করিয়ে আনা হয়।’
সান্তনা খাতুন বলেন, ‘কবিতা পড়ে নিখিলের প্রেমে পড়েছি। বই অমূল্য সম্পদ। তাই দেনমোহর হিসেবে ১০১টি বই চেয়েছি। একটা পারিবারিক গ্রন্থাগার গড়ার স্বপ্ন রয়েছে। যেখানে দেনমোহর হিসেবে পাওয়া বইগুলো সাজিয়ে রাখব।’