বিশ্বমঞ্চে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাহসী নেতৃত্ব এবং শিক্ষা ক্ষেত্রে অগ্রগতি ও দারিদ্র নিরসনে তার ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা করা হয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্টে। সংবাদমাধ্যমটিতে প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে ‘দিজ প্রাইম মিনিস্টার লাফড অ্যাট দ্য মেমে শি ইন্সপায়ার্ড : # ডেসপাইট বিং অ্যা ওম্যান’ শিরোনামের প্রতিবেদনটি লিখেছেন পেটুলা ডিভোরাক।
পেটুলা ডিভোরাক তার সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সাফল্যের গল্প তুলে ধরে লিখেছেন- শেখ হাসিনা বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘ মেয়াদী নারী সরকারপ্রধান। তিনি রাশিয়ার চেয়েও বেশি মানুষের একটি দেশের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। ২০০৪ সালে বিশেষ করে রক্তাক্ত গ্রেনেড হামলাসহ অন্তত ২০টি হামলা থেকে তিনি প্রাণে বেঁচে গেছেন।
শেখ হাসিনা একটি বিপর্যস্ত দেশকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন উল্লেখ করে সাক্ষাৎকারে বলা হয়েছে, জাতিসংঘে তিনি মিয়ানমারের সহিংসতা থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া ১০ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থীর জন্য সাহায্য চেয়েছিলেন।
রোহিঙ্গাদের প্রতি সহানুভূতি ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘শিবিরের জীবন ভালো নয়। তারা তাদের দেশে ফিরতে চায়।’
বাংলাদেশের শরণার্থী পরিস্থিতিকে আমেরিকার সঙ্গে তুলনা দেওয়া যায় না উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, ‘আমেরিকা… একটি বিশাল দেশ। প্রচুর জমি, প্রচুর জায়গা, অনেক কাজ করার সুযোগ।’
পেটুলাকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী পাল্টা প্রশ্ন করেছেন- কেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে ‘এই অভিবাসীদের নিয়ে চিন্তিত হতে হবে?’
তিনি বলেন, জনসংখ্যার দিক থেকে বাংলাদেশের অবস্থান বিশ্বে অষ্টম। এখানে ১৭ কোটি ১০ লাখেরও বেশি মানুষ রয়েছে। ‘আমরা ছোট দেশ।’
দেশীয় সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে শেখ হাসিনা সরকারের জিরো টলারেন্স নীতির প্রশংসা করেছেন পেটুলাক। ‘একজন নারী হওয়া সত্ত্বেও’ সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করে ২০১৫ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছ থেকে প্রশংসা পেয়েছিলেন শেখ হাসিনা। ওই সময় মোদি বলেছিলেন, সন্ত্রাসবাদ নির্মূলে ভারতের চেয়ে এগিয়ে আছে বাংলাদেশ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এর জবাবে বলেছিলেন, পুরুষদের চেয়ে নারীরা সব সময়ই এগিয়ে। ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্য এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই প্রত্যুত্তর বেশ সাড়া ফেলেছিল ২০১৫ সালে। পেটুলা ডিভোরাক সেই প্রসঙ্গ তুললে আবারও হেসে শেখ হাসিনা বলেন, ‘নারীরা সবসময়ই পুরুষদের চেয়ে এগিয়ে।’
বাংলাদেশের প্রধামন্ত্রীর প্রশংসা করে পেটুলা লিখেছেন, গত এক দশকে শেখ হাসিনা তার দেশে দারিদ্র্য বিমোচনে উল্লেখযোগ্যভাবে কাজ করেছেন। শিক্ষার সুযোগ প্রসারিত করেছেন এবং আবাসন ব্যবস্থার উন্নতি করেছেন।
শেখ হাসিনা জানিয়েছেন, এখন আর বাংলাদেশে কুঁড়েঘর দেখা যায় না। একবারে সাধারণ কাঠামো হলেও মানুষ এখন ইট ও টিনের ছাদের বাড়িতে থাকে। আবাসনকে একটি মানবাধিকারের পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছে বাংলাদেশ।