বৈশ্বিক জ্বালানি সংকটের প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের জ্বালানি খাতে সহযোগিতা করতে সম্মত হয়েছে ব্রুনাই। বিশেষ করে এলএনজি ও অন্যান্য পেট্রোলিয়াম পণ্য বাংলাদেশে যোগানের জন্য দীর্ঘমেয়াদী সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা করবে দেশটি।
রোববার (১৬ অক্টোবর) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ব্রুনাইয়ের সুলতান হাসানাল বলকিয়াহের দ্বিপাক্ষিক আলোচনা নিয়ে এক যৌথ বিবৃতিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
বিবৃতি বলা হয়, বাংলাদেশে জ্বালানি চাহিদা বাড়ছে। ব্রুনাই এ অঞ্চলে একটি স্থিতিশীল জ্বালানি যোগানদার। জ্বালানি খাত বিশেষ করে, এলএনজি ও অন্যান্য পেট্রোলিয়াম পণ্য বাংলাদেশে যোগানের জন্য দীর্ঘমেয়াদী সহযোগিতার ভিত্তিতে নতুন উপায় খুঁজে বের করার জন্য সম্মত হয়েছেন উভয় নেতা।
বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, স্বচ্ছ, নিয়মতান্ত্রিক ও সঠিকভাবে অভিবাসনের প্রক্রিয়ার বিষয়ে উভয়পক্ষ সম্মত হয়েছে। বাংলাদেশ থেকে আরও দক্ষ জনশক্তি নিতে সম্মত হয়েছে ব্রুনাই। স্বাস্থ্য খাতে বাংলাদেশ অনেকদূর অগ্রসর হয়েছে, ব্রুনেইতেও স্বাস্থ্যকর্মী প্রয়োজন। সেটি বিবেচনা করে স্বাস্থ্যকর্মী পাঠানোর বিষয়ে একটি সমঝোতা স্মারক সই করার প্রয়োজনীয়তা উভয়পক্ষ স্বীকার করেছে।
ব্রুনাইয়ে হালাল বাণিজ্য অনেক বেশি জনপ্রিয়, সেখানে বাংলাদেশের অংশগ্রহণের সুযোগ আছে। সেজন্য বিবৃতিতে দুই নেতা হালাল বাণিজ্যে সহযোগিতা আরও দৃঢ় করতে সম্মত হয়েছেন। উভয় পক্ষ মানসম্মত উচ্চতর শিক্ষাখাতে সহযোগিতা করবে। উভয় পক্ষ তথ্যপ্রযুক্তি, গ্রিন টেকনোলজি ও সমুদ্র অর্থনীতি খাতে সহযোগিতা করতে সম্মত হয়েছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, উভয় পক্ষ দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়াতে ঐকমত্য পোষণ করেছে। বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগে ব্রুনাইকে আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ। তারই পরিপ্রেক্ষিতে ব্রুনাই খাদ্য ও কৃষিখাতে বিনিয়োগে বাংলাদেশের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
রোহিঙ্গা ইস্যুতে বিবৃতিতে বলা হয়, রোহিঙ্গাদের রাখাইনে ফেরাতে ব্রুনাইয়ের রাজনৈতিক সমর্থনকে প্রশংসা করেছে বাংলাদেশ। শান্তি ও স্থিতিশীলতার লক্ষে এই সংকট সমাধানে বাংলাদেশের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছে ব্রুনাই।
রোববার বিকেল পৌনে ৪টার দিকে ঢাকায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পৌঁছালে শেখ হাসিনা ব্রুনাইয়ের সুলতানকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান। এরপর সরকারপ্রধান ও সুলতান বেশ কিছুক্ষণ একান্তে বৈঠক করেন। পরে বাংলাদেশ ও ব্রুনাইয়ের মধ্যে প্রতিনিধি পর্যায়ের আনুষ্ঠানিক দ্বিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন, অন্যদিকে ব্রুনাইয়ের নেতৃত্ব দেন সুলতান।
বৈঠক শেষে দুই নেতার উপস্থিতিতে বাংলাদেশ-ব্রুনাইয়ের মধ্যে একটি চুক্তি এবং তিনটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই হয়েছে। এগুলো হলো- বিমান চলাচল চুক্তি, বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগ সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক, নাবিকদের সনদ স্বীকৃতি সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক এবং দুদেশের মধ্যে গ্যাস ও অন্যান্য পেট্রোলিয়াম পণ্য সহযোগিতা সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক।