ইউক্রেনে হামলার কয়েক মাস আগে ২০২১ সালের গ্রীষ্মে জাপানে হামলার প্রস্তুতি নিয়েছিল রাশিয়া। রাশিয়ার কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা সংস্থার (এফএসবি) এক সদস্য এ তথ্য ফাঁস করেছেন।
ভ্লাদিমির ওসেচকিন নামের এক রুশ মানবাধিকারকর্মীর কাছে পাঠানো ই-মেইলে এফএসবির এক কর্মী এসব তথ্য ফাঁস করেছিলেন। গুলাগু ডটনেট নামে দুর্নীতিবিরোধী একটি ওয়েবসাইট পরিচালনা করেন ভ্লাদিমির ওসেচকিন। বর্তমানে তিনি ফ্রান্সে নির্বাসনে আছেন। ইউক্রেনে রাশিয়ার অভিযান শুরুর পর এফএসবির অভ্যন্তরে যে ক্ষোভ ও অসন্তোষ তৈরি হয়েছিল, সে সম্পর্কে নিয়মিত ওসেচকিনকে লিখে পাঠাতেন ওই কর্মী।
ওয়াশিংটনভিত্তিক অলাভজনক প্রতিষ্ঠান উইন্ড অব চেঞ্জ রিসার্চ গ্রুপের নির্বাহী পরিচালক ইগর সুশকো রুশ ভাষায় লেখা এ সংক্রান্ত ই-মেইলগুলো ইংরেজিতে ভাষান্তর করেছেন। পরে তিনি এগুলো যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক অনলাইন সাময়িকী নিউজ উইককে দিয়েছেন।
মার্চে ওসেচকিনকে পাঠানো ই-মেইলে এফএসবির ওই সদস্য লিখেছেন, জাপানের সঙ্গে কুরিল দ্বীপপুঞ্জ নিয়ে সামরিক সংঘাতে জড়াতে রাশিয়া প্রস্তুতি নিচ্ছিল। তবে কয়েক মাস পর ইউক্রেনে অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত নেয় রাশিয়া।
এর জন্য যুদ্ধের ইলেকট্রনিক হেলিকপ্টারগুলো গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করছিল, রাশিয়ার প্রচার যন্ত্রও কাজ শুরু হয়েছিল। এর অংশ হিসেবে জাপানিদের ‘নাৎসি’ ও ‘ফ্যাসিস্ট’ এর তকমা দেওয়ার জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছিল।
আনুষ্ঠানিকভাবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অবসান ঘটেছিল যে শান্তিচুক্তির বদৌলতে তাতে রাশিয়া ও জাপান কখনো স্বাক্ষর করেনি। রাশিয়া নিয়ন্ত্রিত কুরিল দ্বীপপুঞ্জের মালিকানা দাবি করাকে কেন্দ্র করে দুই দেশের বিরোধ থাকায় তা করা হয়নি। যুদ্ধ শেষে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন কুরিল দ্বীপপুঞ্জের কুনাশিরি, ইতোরোফু, শিকোতান ও হাবোমাই দ্বীপের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছিল। জাপান এই দ্বীপগুলোর মালিকানা দাবি করে আসছে। এ নিয়ে দশকের পর দশক ধরে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের টানপোড়েন চলছে।