বাংলাদেশের প্রতিবন্ধী শিশুদের ৬০ শতাংশ আনুষ্ঠানিক শিক্ষার বাইরে আছে বলে জানিয়েছে ইউনিসেফ। প্রতিবন্ধী শিশুদের (৫-১৭ বছর বয়সী) মধ্যে মাত্র ৬৫ শতাংশ শিশু প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এবং মাত্র ৩৫ শতাংশ শিশু মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে নথিভুক্ত আছে।
মঙ্গলবার (২৪ জানুয়ারি) শিশুদের উন্নতি ও নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করা জাতিসংঘের সহযোগী প্রতিষ্ঠান ইউনিসেফের সহায়তায় বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) এক জরিপে এসব তথ্য উঠে এসেছে। দেশের বিপুলসংখ্যক প্রতিবন্ধী শিশু মূলধারার শিক্ষার বাইরে থাকায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ইউনিসেফ।
জরিপে দেখা গেছে, প্রতিবন্ধী শিশুদের মধ্যে যারা আনুষ্ঠানিক শিক্ষা গ্রহণ করছে, তারা তাদের বয়স অনুপাতে শিক্ষাগতভাবে গড়ে দুই বছরের বেশি সময় পিছিয়ে আছে।
জরিপের তথ্য অনুসারে, বাংলাদেশের ১ দশমিক ৭ শতাংশ শিশু ‘প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইন, ২০১৩’-এ সংজ্ঞায়িত ১২ ধরনের প্রতিবন্ধিতার অন্তত একটি প্রতিবন্ধিতা নিয়ে বেঁচে আছে। অন্যদিকে, ৩ দশমিক ৬ শতাংশ শিশুর অন্তত এক ধরনের ‘ফাংশনাল ডিফিকাল্টি’ আছে। ফাংশনাল ডিফিকাল্টির বিভিন্ন ধরনের মধ্যে আছে—দেখা, শোনা, আঙুল ব্যবহার করে সূক্ষ্ম কাজ করা, যোগাযোগ, শেখা, খেলা বা আচরণ নিয়ন্ত্রণ।
জরিপে বলা হয়েছে, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের মধ্যে যারা কাজ করার বয়সী, তাদের মাত্র এক-তৃতীয়াংশ কর্মরত। যেখানে পুরুষদের তুলনায় নারীদের কাজে নিযুক্ত না থাকার সম্ভাবনা অনেক বেশি। যদিও প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের মধ্যে যারা সরকারিভাবে নিবন্ধিত, তাদের ৯০ শতাংশ সামাজিক সুরক্ষা ভাতা পান। বেশিরভাগ প্রতিবন্ধী ব্যক্তি (প্রায় ৬৫ শতাংশ) অনিবন্ধিত থেকে যায়।
বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি শেলডন ইয়েট বলেছেন, বাংলাদেশে প্রতিবন্ধী শিশুদের মধ্যে কতজন শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে, তা তুলে ধরেছে নতুন এ তথ্য। এ শিশুদের জন্য আমাদের আরও অনেক কিছু করা দরকার।
বিবিএসের প্রকল্প পরিচালক ইফতেখাইরুল করিম বলেন, রিপোর্টে প্রকাশিত তথ্য-উপাত্ত বাংলাদেশে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অধিকার নিশ্চিত করার জন্য পরিকল্পনা ও উদ্যোগ প্রণয়নে সরকারকে সহায়তা করবে।