দীর্ঘদিন ধরেই ধুঁকছে পাকিস্তানের অর্থনীতি। ডলারের নিরিখে তাদের মুদ্রার দাম পড়েই চলেছে। জ্বালানির অভাব দেখা দিয়েছে বলেও বিভিন্ন গণমাধ্যমে রিপোর্টে প্রকাশিত হয়েছে। এর মধ্যেই দাম বাড়লো জ্বালানির। পাকিস্তানে পেট্রোল এবং ডিজেলের প্রতি লিটারে দাম বাড়লো ৩৫ টাকা।
পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রী ইশাক দার জানিয়েছেন, জ্বালানি এবং গ্যাস নিয়ামক সংস্থার সুপারিশ মেনেই দাম বাড়ানো হয়েছে।
দাম যে বাড়তে পারে, সেই আশঙ্কা আগেই করেছিলেন পাকিস্তানবাসী। তাই শনিবার (২৮ জানুয়ারি ২০২৩) থেকে পেট্রোল পাম্পের সামনে ছিলো দীর্ঘ লাইন। সামাজিকমাধ্যমে নাগরিকরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন যে, ১ ফেব্রুয়ারি থেকে জ্বালানির দাম বাড়বে। প্রতি লিটারে ৪০ থেকে ৮০ টাকা বাড়তে পারে দাম। সেই আশঙ্কা সত্যি করে প্রতি লিটারে ৩৫ টাকা দাম বাড়লো।
ডলারের নিরিখে পাকিস্তানি মুদ্রার দাম পড়ছে। বিদেশি মুদ্রার তহবিল কমতে কমতে ৩৬৮ কোটি ডলারে নেমেছে। অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন, এই পরিস্থিতিতে বড়জোর আর তিন সপ্তাহ বিদেশ থেকে পণ্য আমদানি করতে পারবে পাকিস্তান। এখনই আন্তর্জাতিক অর্থভান্ডার (আইএমএফ) ১০০ কোটি ডলার অনুদান না দিলে বিপাকে পড়বে তারা। বন্ধ হতে পারে জ্বালানি আমদানিও। ইতিমধ্যে খাদ্য সংকট ভোগাচ্ছে সে দেশকে। আটার দাম আকাশছোঁয়া।
জিয়ো নিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইতিমধ্যে পাকিস্তানে জ্বালানির ভান্ডারে টান পড়েছে। গুজরনওয়ালার মাত্র ২০ শতাংশ পেট্রোল পাম্পে জ্বালানি রয়েছে। রহিম ইয়ার খান, বাহাওয়ালপুর, সিয়ালকোট, ফয়জলাবাদেও জ্বালানির অভাব দেখা দিয়েছে। যদিও জ্বালানির অভাবের বিষয়টি পাকিস্তানের শাহবাজ শরিফ সরকার এই অস্বীকার করেছে।
এখন দাম বৃদ্ধির পর অর্থমন্ত্রীর দাবি, দেশে জ্বালানির ঘাটতি রয়েছে বলে রটনা শুরু হয়। মানুষ তাই বেশি করে জ্বালানি কিনতে শুরু করেন। এই প্রবণতা রুখতেই জ্বালানির দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে নিয়ামক সংস্থা।
৩১ জানুয়ারি থেকে ৯ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানে পরিস্থিতি দেখতে যাবেন আইএমএফ আধিকারিকরা। শাহবাজ শরিফ সরকারের আশা, তার পর ফের অনুদান দেবে আইএমএফ। ২০১৯ সালে পাকিস্তানকে ৬০০ কোটি ডলার অনুদান দিতে সম্মত হয় আইএমএফ। গত বছর বন্যার পর আরও ৭০০ কোটি টাকা অনুদানের কথা ঘোষণা করে। যদিও গত নভেম্বরে তা দেওয়া বন্ধ করে আইএমএফ। জানায়, পাকিস্তান সরকার রাজস্ব ঘাটতি মেটাতে ব্যর্থ হয়েছে।
সূত্র: আনন্দবাজার