তুরস্ক ও সিরিয়ায় ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা ১১ হাজার ছাড়িয়েছে। বুধবার বার্তা সংস্থা এএফপি এ তথ্য জানিয়েছে।
ভূমিকম্পে ধ্বংসস্তুপে পরিণত হওয়া তুরস্কের শহরগুলোতে উদ্ধারকারীদের প্রতিনিয়ত মর্মান্তিক দৃশ্যের সম্মুখীন হতে হচ্ছে। বুধবার ধ্বংসস্তুপ থেকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে এক নবজাতককে। তবে তার বাবা-মাকে পাওয়া যায়নি। বেঁচে যাওয়া এক বাবাকে ভাঙ্গা হাতে জড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে মৃত কন্যা সন্তানকে।
ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থলের কাছে তুর্কি শহর কাহরামানমারাসের বাসিন্দা মেসুত হ্যান্সারকে বুধবার ধ্বংসস্তূপের উপর বসেছিলেন। তিনি তার ১৫ বছর বয়সী মেয়ে ইরমাকের হাতটি ছেড়ে দিতে অস্বীকৃতি জানাচ্ছিলেন। ইরমাকের দেহটি কংক্রিটের স্ল্যাব এবং পেঁচানো রডের মধ্যে মধ্যে প্রাণহীন অবস্থায় পড়েছিল।
কর্মকর্তা ও চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, সোমবারের ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্পে তুরস্কে ৮ হাজার ৫৭৪ জন এবং সিরিয়ায় ২ হাজার ৬৬২ জন মারা গেছে। এর ফলে মোট সংখ্যা ১১ হাজার ২৩৬ জনে পৌঁছেছে। ভূমিকম্পের পর থেকে দুই দিন ও রাত ধরে উদ্ধারকারীরা হিমাঙ্কের তাপমাত্রায় কাজ করছে।
বেঁচে যাওয়া মানুষগুলোকে বুধবারও প্রচণ্ড ঠান্ডায় খোলা আকাশের নিচে থাকতে দেখা গেছে। অনেকে মসজিদ, স্কুল ও বাসস্ট্যান্ডে আশ্রয় নিয়েছেন। ধ্বংসস্তুপ ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকায় দুর্গত এলাকায় ত্রাণও আসতে দেরি হচ্ছে।
কাহরামানমারাসের বাসিন্দা আলি সাগিরোগলু বলেছেন, ‘আমি আমার ভাইকে ধ্বংসাবশেষ থেকে ফিরিয়ে আনতে পারব না। আমি আমার ভাতিজাকে ফিরিয়ে আনতে পারব না। এদিকে তাকাও। এখানে কোন রাষ্ট্রীয় কর্মকর্তা নেই, ঈশ্বরের দোহাই।’
তিনি বলেন, ‘দুই দিন ধরে আমরা রাষ্ট্রীয় কোনও সহযোগিতা পাইনি, শিশুরা ঠান্ডায় জমে যাচ্ছে।’
আশেপাশের গাজিয়ানটেপ এলাকাতে দোকানপাট বন্ধ রয়েছে। বিস্ফোরণ এড়াতে এলাকাগুলোতে গ্যাসের লাইন কেটে দেওয়া হয়েছে এবং পেট্রোল খুঁজে পাওয়া কঠি। ফলে বেঁচে থাকা মানুষগুলোকে তীব্র শীতের মধ্যে দিনাতিপাত করতে হচ্ছে।