তুরস্ক ও সিরিয়ায় ভয়াবহ ভূমিকম্প থেকে প্রাণে বেঁচে যাওয়া লোকজন দুর্বিষহ অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন। অনেকেই এখন খাদ্য ও আশ্রয়ের জন্য ছুটছেন। যাদের স্বজন এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে আছেন, তাদের অসহায়ত্ব আরও বেশি। কেউ কেউ বলছেন, ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে স্বজনদের উদ্ধারের আকুতি তারা শুনেছেন।
রয়টার্সের ফটোগ্রাফার উমিত বেকতাসের উঠানো আব্দুল আলিম মুয়াইনির ছবিটি আলাদাভাবে নাড়া দিচ্ছে সবাইকে। স্ত্রী-সন্তানদের মরদেহের পাশে নিজের নিরুপায় হয়ে বেঁচে থাকার যে যন্ত্রণা তা দেয়াল চাপা পড়ে আঘাত পাওয়ার চেয়ে বেশি যন্ত্রণার, ছবিটি হয়তো সে কথাই বলছে।
রয়টার্সের ওই ফটোগ্রাফারের ছবির বর্ণনায় আল-জাজিরা জানিয়েছে, হাতায়ায় ধ্বংসস্তূপের নিচে পড়ে আছে একজনের নিথর দেহ। পাশেই হাত উঁচু করে সাহায্য প্রার্থনা করছেন এক ব্যক্তি।
খবরে বলা হয়েছে, সিরিয়ান বংশোদ্ভূত আব্দুল আলিম গৃহযুদ্ধের কারণে সিরিয়া থেকে পালিয়ে তুরস্কে আসেন। তুরস্কে তিনি ইসরা নামে এক তুর্কি নারীকে বিয়ে করেন। তাদের মাহসেন ও বিসিরা নামে দুই কন্যা সন্তান রয়েছে। ভূমিকম্পে দেয়ালের স্ল্যাব ধসে তার স্ত্রী মারা গেছে। আর স্ল্যাবে পা আটকে স্ত্রীর পাশেই উদ্ধারের অপেক্ষায় ছিলেন আব্দুল আলিম। জ্ঞান থাকলেও বাম চোখে আঘাত পাওয়ায় তা খুলতে কষ্ট হচ্ছে তার। উদ্ধারকর্মীদের সঙ্গে সে কথা বলেছেন।
ফটোগ্রাফার উমিত বেকতাস আব্দুল আলিমের সঙ্গে সরাসরি কথা বলতে না পারলেও তার দুই বন্ধু বিস্তারিত জানিয়ে বলেছেন, আব্দুল আলিমকে উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি পানি শূন্যতায় ভুগছেন। তার চিকিৎসা প্রয়োজন।
তবে বাঁচানো যায়নি তার পরিবারকে। মাটিতে কম্বলে মোড়ানো আছে তিনটি দেহ ইসরা, মাহসেন, বিসিরার।
তুরস্ক এবং সিরিয়ায় আঘাত হানা বিধ্বংসী ভূমিকম্পে প্রাণহানির সংখ্যা ১৫ হাজার ছাড়িয়েছে। গত সোমবারের ভূমিকম্পে ধ্বংস হয়ে যাওয়া ভবনের নিচে আটকে পড়া শত শত মানুষকে উদ্ধার করা কঠিন হয়ে পড়েছে।
দেশ দুটির উদ্ধারকারীরা বলেছেন, তীব্র ঠান্ডা এবং বৈরী আবহাওয়ার কারণে লোকজনকে জীবিত উদ্ধারের সময় দ্রুতই ফুরিয়ে আসছে। ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে লোকজনকে উদ্ধারে সময়ের বিপরীতে লড়াই করতে হচ্ছে তাদের।