পঞ্চগড় পৌর শহরের শতবর্ষী বৃদ্ধা জরিনা বেগম। জীবনের শেষ প্রান্তে এসে অসহায় হয়ে পড়েছেন তিনি। বৃদ্ধার তিন মেয়ে ও চার ছেলের কেউই তার দায়িত্ব নিতে চান না। জরিনা বেগম রৌশনাবাগ এলাকার মৃত বুধারু মোহাম্মদের স্ত্রী।
বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) দুপুরে সরেজমিনে রৌশনাবাগ গিয়ে দেখা যায়, একটি বাড়ির বাইরে বসে কান্না করছেন বৃদ্ধা জরিনা বেগম। এ সময় তাকে ঘিরে রেখেছেন প্রতিবেশীরা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন পৌর কাউন্সিলর আরিফ হোসেন।
স্থানীয়রা জানান, প্রায় ৪০ বছর আগে জরিনা বেগমের স্বামী মারা যান। এরপর থেকেই সন্তানদের কাছে বোঝা হয়ে যান তিনি। শারীরিক সক্ষমতা থাকাকালীন একাই চলতেন। কিন্তু বয়স বেড়ে যাওয়ায় আশ্রয় হয় মেয়ে রমিছা বেগমের ঘরে। এতদিন তার সঙ্গেই ছিলেন। সম্প্রতি রমিছা তার স্বামী তবিবর রহমানের সঙ্গে ঝগড়া করে কোথাও চলে যান। দেখভাল করার কেউ না থাকায় মেয়ের জামাই বৃদ্ধাকে ঘর থেকে বের করে দেন।
প্রতিবেশী হাসিবুল ইসলাম বলেন, ‘বৃদ্ধা জরিনা বেগমকে তার সন্তানরা কেউ দেখভাল করেন না। প্রতিবেশীরা খোঁজ নিতে গেলেও তারা বাধা দেন। ভাই-বোনের পারিবারিক বিরোধকে কেন্দ্র করে তারা তাদের মাকে অবহেলায় রেখেছেন।’
বৃদ্ধার ছেলে আব্দুল জলিল বলেন, ‘টানাপোড়নের সংসার আমার। অল্প একটু জায়গায় স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে থাকি। মায়ের জন্য একটা ঘরের ব্যবস্থা করা গেলে তাকে দেখভালে আমার আপত্তি নেই।’
পৌর কাউন্সিলর আরিফ হোসেন বলেন, ‘বৃদ্ধা জরিনা বেগম সন্তানদের বোঝা হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। কয়েকদিন আগেও তাকে ঘর থেকে বের করে দেন তার সন্তানরা।’
তিনি বলেন, ‘বৃদ্ধাকে ঘরের ব্যবস্থা করে দিব, এমন আশ্বাস দিয়ে তার ছেলেদের কিছুদিনের জন্য দেখভালের অনুরোধ করি। কিন্তু এক সপ্তাহ না যেতেই ফের বৃদ্ধাকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছেন তারা।’
আরিফ হোসেন আরও বলেন, বৃদ্ধার সার্বিক খোঁজখবর রাখছি। বিষয়টি মেয়র এবং ইউএনওকে জানিয়েছি। বৃদ্ধার থাকার জন্য দ্রুত ঘরের ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।