‘(ফিফায়) যখন প্রমাণিত হয়েছে (সোহাগের অনিয়ম) তখন আজকে জরুরি সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে তাকে ভবিষ্যতে আর কোনো দিন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনে কোনো স্থান (জায়গা) দেওয়া হবে না’ -আবু নাঈম সোহাগ নিষিদ্ধ হওয়ার পর জরুরি সভায় সিদ্ধান্ত নিয়ে এভাবেই বলেছিলেন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদি।
আর্থিক জালিয়তির কারণে সোহাগকে দুই বছরের নিষেধাজ্ঞা দেয় ফিফা। তার ক’দিন পরেই আসে বাফুফেতে আজীবন নিষেধাজ্ঞার খড়গ। তবে বসে নেই সোহাগ, ফিফার শাস্তির বিরুদ্ধে আপিল করেছেন ইতোমধ্যে। সেখানে নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে চান বাফুফের সাবেক এই সাধারণ সম্পাদক।
বুধবার রাজধানীর একটি পাঁচতারকা হোটেলে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এমনটাই বলেছেন সোহাগ এবং তার আইনজীবী আজমালুল হক কেসি।
সোহাগ সরাসরি নিজেকেই নির্দোষ কিংবা দোষী দাবি করেননি। তার ভাষ্য, ‘সময় সব কিছুর উত্তর দিয়ে দিবে। আমরা আমাদের পক্ষ থেকে সব ডকুমেন্টস নিয়ে প্রস্তুত আছি। কোর্ট অব স্পোর্টস আব্রিট্রেশনে (সিএএস) আপিল করছি। সেখানেই সব কিছু প্রমাণ হবে। আমি বিশ্বাস করি, এই অভিযোগ থেকে মুক্ত হয়ে এসে দেশের ভাবমুর্তি উজ্জ্বল করতে পারবো।’
আইনজীবী আজমালুল হোসেন বলেন, ‘আমরা নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই ক্রীড়া আদালতে আপিল করেছি। এখানে শুনানি কবে হবে তা আমরা এখনো জানি না। এটা একটা দীর্ঘ পক্রিয়া। ছয় মাস থেকে এক বছর সময় লেগে যেতে পারে রায় আসতে। তবে আমরা মক্কেল আবু নাঈম সোহাগের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা ভুল প্রমাণ করতে পারার বিষয়ে আমরা আশাবাদী।’
এর আগে নিষিদ্ধ হওয়ার পর আইনজীবীর মাধ্যমে একটি বিবৃতি দিয়েছিলেন সোহাগ। এরপর এই প্রথম তিনি সরাসরি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন। সেই বিবৃতিতে ফিফার এই তদন্ত সঠিক নয় দাবি করেছিলেন, আজও নানা কথায় সেটিই উঠে এসেছে।
সোহাগের আইনজীবী এর আগে বাফুফের এথিক্স কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন। আন্তর্জাতিক আইনে বেশ অভিজ্ঞ তিনি। শুধু তাই নয় ক্রীড়া বিষয়ক নানা আইন-কানুন নিয়েও বেশ ভালো জানাশোনা আছে তার। ফিফার সিদ্ধান্তকে ভুল দাবি করে আজমালুল বলেন, ‘২০১৭-২০ সাল পর্যন্ত বাফুফের ক্রয় কমিটি ও নীতিমালা ছিল না। ফিফার নির্দেশেই সকল কিছু হয়েছে। ফলে তাদের প্রদত্ত সিদ্ধান্ত সঠিক নয়।’
৫ মে আন্তর্জাতিক ক্রীড়া আদালতে ফিফার সিদ্ধান্তের বিপক্ষে আপিল করা হয়েছে। ১৫ মের মধ্যে সব ধরণের তথ্য উপাত্ত জমা দেবেন। সেটি হতে পারে ১০ হাজার পৃষ্ঠারও বেশি। এর আগে ফিফার শুনানিতে দুই ব্রিফকেস ডকুমেন্ট নেওয়ার কথা জানান আজমালুল। অর্থ্যাৎ তিনি বোঝাতে চেয়েছেন তথ্য-উপাত্তের মাধ্যমে সোহাগকে নির্দোষ প্রমাণ করবেন তিনি, ‘আমরা যুক্তি ও প্রমাণ উপস্থাপন করেছি। এরপর আরও বেশ কিছু পক্রিয়ার মধ্য দিয়ে আমাদের যেতে হবে। আশা করি ফলাফল ইতিবাচক হবে।’