দেশে বলিউডের সিনেমা মুক্তি নিয়ে সবসময়ই ছিল বিতর্ক। অনেক জল্পনা-কল্পনার পর গতকাল দেশের ৪১টি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় বলিউডের সিনেমা ‘পাঠান’। গতকালের প্রেক্ষাগৃহের চিত্র বলছে-সিনেপ্লেক্সে ‘পাঠান’ এর জয়জয়কার। অন্যদিকে সিঙ্গেল স্ক্রিনগুলোর দর্শক প্রথম দিনই মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন।
স্টার সিনেপ্লেক্সের বসুন্ধরা শাখায় শুক্রবার ভিড় লক্ষ করা গেছে। এ সময় অনেক দর্শকের গায়ে শাহরুখ খানের টি-শার্ট দেখা গেছে। শাহরুখ খানের সিনেমার মুক্তি ঘিরে বসুন্ধরা সিটি শপিং-এর বাইরে একদল তরুণকে কেক কাটতে দেখা গেছে। এসব নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিতর্কও করেছেন অনেকে। কেউ কেউ বলছেন সিনেমাটিকে দেশে হিট বানাতেই এসব নাটক তৈরি করা হয়েছে।
মুক্তির প্রথম দিন ৭টি শাখায় ৩৪টি শো চালিয়েছে স্টার সিনেপ্লেক্স। স্টার সিনেপ্লেক্সের জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপক মেসবাহ উদ্দিন আহমেদ জানান, ৩৪টি শোর মধ্যে বেশির ভাগ শো হাউসফুল। ঢাকার আরেক মাল্টিপ্লেক্স ব্লকবাস্টার সিনেমাসেও দর্শক ছিল গড়পড়তা। প্রেক্ষাগৃহটির ৩টি হলে ৯টি শো চলেছে। ব্লকবাস্টার সিনেমাসের বিপণন কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান জানান, ‘মোটামুটি ভালো। এখনো কোনো শো হাউসফুল হয়নি, তবে হাউসফুলের কাছাকাছি।’
রাজধানীর বেশ কয়েকটি সিঙ্গেল স্ক্রিনের চিত্র ছিল ভিন্ন। মধুমিতা হলে পাঁচটি শো চালানো হয়েছে। এর মধ্যে প্রত্যেকটি শোতে অর্ধেকের কম দর্শক উপস্থিতি ছিল। বলিউডের সিনেমার পক্ষে সোচ্চার ছিলেন মধুমিতা হলের কর্ণধার ইফতেখার উদ্দিন নওশাদ। দর্শক খড়ার জন্য তিনি দুষছেন পুরনো সিনেমাকে। তার ভাষ্য অনুযায়ী বলিউডের সঙ্গে একত্রে দেশে সিনেমা মুক্তি দিলে দর্শক সংখ্যা বাড়বে।
ফার্মগেটের আনন্দ সিনেমা হলে দর্শক উপস্থিতি কম ছিল বলে জানান সিনেমা হলের দায়িত্বে থাকা মনজুর আহসান। তিনি বলেন, এই সিনেমাটির দর্শক একদম কম। বাংলাদেশের সিনেমা হলে দর্শক একটু বেশি থাকে। যেহেতু ভাষাগত একটা ব্যাপার আছে। হিন্দি ভাষা অনেকেই বোঝে না। ঈদের সিনেমার দর্শক ‘পাঠান’ থেকে অনেক ভালো ছিল বলে মন্তব্য করেন তিনি। ৩০-৫০-১০০ জনকে নিয়ে শো চালাতে হয়েছে। ঈদের সিনেমার থেকে আশানুরূপভাবে অনেক কম দর্শক।
ঢাকার বাইরে যশোরে তেমন সাড়া ফেলতে পারেনি ‘পাঠান’। মণিহার প্রেক্ষাগৃহের ১ হাজার ৪০০ আসনের বিপরীতে ১০০ থেকে ১৫০ জন দর্শক হয়েছে প্রতি শোতে। শুক্রবার মণিহারে দুটি শো চালানো হয়েছে। প্রেক্ষাগৃহের ব্যবস্থাপক তোফাজ্জেল হোসেনের ভাষ্যে, দর্শকের উপস্থিতি যেমনটা আশা করেছিলাম, তেমনটা হচ্ছে না। বাংলা সিনেমার মতো ‘পাঠান’ এর দর্শকও গতানুগতিক।’
বাংলাদেশে বলিউডের সিনেমার অতীত রেকর্ড ভালো ছিল না। সাফটা চুক্তির আওতায় গত ১১ এপ্রিল পাঁচটি শর্ত মেনে দুই বছরের জন্য ১৮টি হিন্দি সিনেমা আমদানির অনুমতি দিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। তারই প্রেক্ষিতেই প্রথম হিন্দি সিনেমা হিসেবে বাংলাদেশে মুক্তি পেয়েছে সিদ্ধার্থ আনন্দ পরিচালিত এই সিনেমা।