চলতি বছরের জুলাইয়ে যে গরম অনুভূত হয়েছে, গত ১ লাখ ২০ হাজার বছরেও বিশ্বে এতোটা গরম অনুভূত হয়নি। বৃহস্পতিবার জলবায়ু বিজ্ঞানীরা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
একই দিন নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্টনিও গুতেরেস জলবায়ু পরিবর্তনে কারণে বর্তমান বৈশ্বিক পরিস্থিতি সম্পর্কে বলেছেন, বৈশ্বিক উষ্ণতার যুগের অবসান হয়েছে এবং ‘বৈশ্বিক ফুটন্তের যুগ চলে এসেছে’।
চলতি জুলাই মাসের তাপের প্রভাব সারা বিশ্বে দেখা গেছে। হাজার হাজার পর্যটক গ্রিসের রোডস দ্বীপে দাবানল থেকে পালিয়ে গেছেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ-পশ্চিমজুড়ে সিদ্ধ হওয়ার মতো তাপ সহ্য করতে হয়েছে বহু মানুষকে। উত্তর-পশ্চিম চীনের একটি শহরে তাপমাত্রা ৫২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত রেকর্ড করা হয়েছে, যা দেশটির ইতিহাসে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল।
বৃহস্পতিবার প্রকাশিত জার্মানির লাইপজিগ ইউনিভার্সিটির একটি বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ২০২৩ সালের জুলাই বৈশ্বিক সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড অর্জন করবে।
ইউরোপীয় ইউনিয়েনের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চলতি মাসের গড় বৈশ্বিক তাপমাত্রা ২০১৯ সালের জুলাইয়ের তুলনায় কমপক্ষে শূন্য দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি হবে বলে অনুমান করা হয়েছে। ১৭৪ বছরের পর্যবেক্ষণ রেকর্ডের মধ্যে এটি সর্বোচ্চ।
পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের জলবায়ু বিজ্ঞানী মাইকেল মান জানিয়েছেন, জুলাইয়ের মাঝামাঝিতেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল যে এটি রেকর্ড উষ্ণ মাস হতে চলেছে। এটি এই গ্রহের ‘একটি সূচক যেটি নির্দেশ করছে, আমরা জীবাশ্ম জ্বালানি যতক্ষণ পোড়াব ততক্ষণ উষ্ণ হতে থাকবে।’
লাইপজিগ ইউনিভার্সিটির জলবায়ু বিজ্ঞানী কারস্টেন হস্টেন বলেছেন, ‘আমাদের গ্রহে একই রকম উষ্ণ পরিস্থিতি খুঁজে পেতে আমাদের হাজার নয়, বরং হাজার হাজার বছর পিছনে যেতে হতে পারে।’
তিনি জানান, জলবায়ু রেকর্ড, বরফের স্তর এবং গাছের ভেতরের গোলকের মতো জিনিসগুলো এটাই ইঙ্গিত দিচ্ছে যে, এক লাখ ২০ হাজার বছর আগেও বিশ্ব এতো গরম ছিল না।