সিঙ্গাপুরে বিএনপি ও জাতীয় পার্টির নেতাদের বৈঠক থেকে কোনো সহিংসতার সিদ্ধান্ত যেনো না আসে-এ আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, রাজনীতি করেন, দয়া করে ষড়যন্ত্র করবেন না। রাজনীতি করেন দয়া করে সন্ত্রাস করবেন না।
সোমবার (২৮ আগস্ট) বিকেলে রাজধানীর রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে আইইবির শোক দিবসের আলোচনা সভায় এ আহ্বান জানান তিনি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আজকে বিএনপি নেতারা দলবেঁধে গেছে সিঙ্গাপুরে। আবার শুনেছি জাতীয় পার্টির এক গ্রুপও গেছে। ভালো আলাপ-আলোচনা করুক। রাজনৈতিক আলোচনা দেশে হোক বিদেশে হোক-করবে এটা তাদের অধিকার।
‘রাজনীতি করেন, দয়া করে ষড়যন্ত্র করবেন না। রাজনীতি করেন দয়া করে সন্ত্রাস করবেন না। রাজনীতি করেন দয়া করে ১৩/১৪ সালের মতো আগুন নিয়ে বাস পুড়ানো, মানুষ পোড়ানো, রাস্তা পোড়ানো, গাছ পোড়ানো এই রাজনীতি থেকে বিরত থাকুন।’
গণ-আন্দোলন না করতে পারলে বাংলাদেশে আন্দোলন করে কোনো লাভ হবে না জানিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আজকে মঈন খান বলেন… তারেক রহমানকে আওয়ামী লীগ সরকার ভয় পায়। কেমন সাহসী মানুষ? রাজনীতি আর করবেন না এমন মুচলেকা দিয়ে পালিয়ে গেলেন লন্ডনে। আন্দোলনের ডাক দেয়, টেমস নদীর ওপার থেকে… মনে হয় তার ডাকে বঙ্গপোসাগরের সব জল ঢাকা শহর ম্লান করে দিবে, এত সোজা নয়।’
‘বঙ্গবন্ধুর ডাকে ৬৯ এর গণবিস্ফোরণ সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ নেতৃত্ব দিয়েছে। আর রিমোট কট্রোলে লন্ডন থেকে ফরমায়েশ দিলেন আর বাংলাদেশের সব লোক আন্দোলনে যোগ দিচ্ছে। কি, ডিসেম্বরের দশ তারিখে দেশ চালাবে খালেদা জিয়া। আর ১১ তারিখে তারেক জিয়া আসবে? কি হলো সেই আন্দোলনের। এর মধ্যে আন্দোলন কি হলো, নয়াপল্টন থেকে আন্দোলন গোলাপবাগের গরুর হাটে হোঁচট খেয়ে পড়ে গেলো। সেই যে হোঁচট খেলো সেই আন্দোলনের আর খবর নাই।”
কাদের বলেন, ‘জনগণ যেই আন্দোলনে নেই্, সেই আন্দোলন পৃথিবীর কোথাও সফল হয়নি। বাংলাদেশেও নেতাকর্মী নিয়ে অতিরিক্ত পোশাক নিয়ে আসার জন্য মির্জা ফখরুল কত অনুরোধ করলেন।’
‘সমাবেশের নামে লাঠিশোটা কম্বল নিয়ে পিকনিক করলেন, জনগণ যোগ দিলো না তাদের ডাকে। নেতাকর্মীরা আন্দোলন করলো, সেই আন্দোলন সফল হলো না। গণ-আন্দোলন ছাড়া কোনো আন্দোলন পৃথিবীর কোথাও সফল হয় না, বাংলাদেশেও হবে না, এটাই স্বাভাবিক।’
বিএনপি আবারও সন্ত্রাসের পথে হাঁটছে দাবি করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদকের কাছে খবর আছে বলে দাবি করেছেন। তিনি বলেন, খবর আছে, পাবলিক যখন আসবে না, এবার আপনারা সন্ত্রাসের পথে যাচ্ছেন। কানাডার আদালত ইতোমধ্যে রায় দিয়েছেন পাঁচ জনের বেলায়, রাজনৈতিক আশ্রয়ের জন্য, চাইতে গিয়ে তাদের পাঁচজন নেতা কানাডার ফেডারেল আদালত বলে দিয়েছে এরা হচ্ছে সন্ত্রাসী, এদের দল একটা গণতান্ত্রিক সরকারকে উৎখাত করার জন্য সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে। কাজেই এদরেকে রাজনৈতিক আশ্রয় দেওয়া যাবে না। মার্কিন হোম সিকিউরিটির লিস্টেও এই দেশের সন্ত্রাসী জাতীয়তাবাদী, তাদের নাম আছে।
বিএনপি আবার ক্ষমতায় আসলে বাংলাদেশের গণতন্ত্র গিলে খাবে বলে দাবি করে কাদের বলেন, আবার যদি আসতে পারে গণতন্ত্র তারা গিলে খাবে। আবার যদি আসতে পারে, এই দেশে রক্তের বন্যা বয়ে যাবে। কোনো ভালো মানুষ বাঁচতে পারবে না। মুক্তিযুদ্ধের কোনো অস্তিত্ব তারা রাখবে না। নিশ্চিহ্ন করে দিবে মুক্তিযোদ্ধাদের, নিশ্চিহ্ন করে দেবে বঙ্গবন্ধুর এই বাংলাদেশকে যারা রক্ষা করেছে তাদের।
‘এই অপশক্তি সাম্প্রদায়িকতার সবচেয়ে বড় আশ্রয়স্থল। এই বিএনপি সাম্প্রদায়িকতা জঙ্গিবাদের পৃষ্ঠপোষক। এদরে হাতে ক্ষমতায় গেলে বাংলাদেশেকে পাকিস্তান বানাবে।”
ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশের সভাপতি আবদুস সবুর এই শোক দিবসের আলোচনা সভার সভাপত্বি করেন।