ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী হামাসের শনিবারের হামলার জবাবে গাজায় উপত্যকায় টানা ৬ দিন ধরে আকাশ থেকে তাণ্ডব চালাচ্ছে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী।
আল জাজিবার খবরে বলা হয়েছে, গাজায় প্রতিদিন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে ফিলিস্তিনিদের মৃত্যুর সংখ্যা। অন্যদিকে আহতরা হাসপাতালে চিকিৎসাও নিতে পারছেন না। ইসরায়েলি বিমান গাজায় বিভিন্ন স্থাপনা ও প্রধান সড়কগুলোকে হামলা চালানোর পাশাপাশি সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল এবং আন্তর্জাতিক সাহায্যকারী সংস্থা রেডক্রস ও রেডক্রিসেন্ট পরিচালিত চিকিৎসা কেন্দ্রগুলোতেও অবিরাম বোমাবর্ষণ করে চলেছে।
উদ্ধারকারী প্রতিষ্ঠান, জরুরিসেবা প্রতিষ্ঠান ও স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানের অ্যাম্বুলেন্স লক্ষ্য করে বোমা হামলা চালাতেও দ্বিধা করছে না ইসরায়েলি বিমান।
ইসরায়েল ইচ্ছাকৃতভাবে অ্যাম্বুলেন্সগুলোকে বিমান হামলার লক্ষ্যবস্তু বানাচ্ছে বলে শুরু থেকে অভিযোগ করে আসছে ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এবার একই অভিযোগ তুললো ফিলিস্তিনের রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি (পিআরসিএস)।
শনিবার হামাসের সঙ্গে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ইসরায়েল এ পর্যন্ত অন্তত ২৫টি অ্যাম্বুলেন্সে বোমাবষণ করেছে বলে জাতিসংঘের মানবিক সংস্থা ওসিএইচএ সূত্রে জানা গেছে। এছাড়া একটি অ্যাম্বুলেন্স স্টেশন লক্ষ্য করেও গোলাবর্ষণ করেছে ইসরায়েল।
বুধবার ফিলিস্তিনের রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির (পিআরসিএস) অ্যাম্বুলেন্সে ইসরায়েলের বিমান হামলার ঘটনা ঘটে। আধা ঘণ্টার মধ্যে দুটি হামলায় নিহত হোন পিআরসিএস’র চারজন প্যারামেডিক।
বৃহস্পতিবার এ ঘটনা সম্পর্কে জানতে পিআরসিএসের মুখপাত্র নেবাল ফারসাখের সঙ্গে কথা হয় আল জাজিরার। নেবাল ফারসাখের দাবি, ইসরায়েল ইচ্ছাকৃতভাবেই রেড রিসেন্টের অ্যাম্বুলেন্সকে বিমান হামলার লক্ষ্যবস্তু বানিয়েছে।
তিনি বলেন, ‘প্রথম হামলার ঘটনাটি ঘটে উত্তর গাজায়। বিমান হামলা চালিয়ে আমাদের অ্যাম্বুলেন্সটি সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছিল। এই হামলায় আমাদের তিনজন প্যারোমেডিক নিহত হয়েছেন। দ্বিতীয় হামলাটি চালানো হয় পূর্ব গাজার একটি অঞ্চলে। এতে আমাদের আরেকজন প্যারামেডিক নিহত হয়েছেন।’
পিআরসিএস’র মুখপাত্র আরো বলেন, ‘পিআরসিএস’র অ্যাম্বুলেন্সগুলোকে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী ইচ্ছাকৃতভাবে হামলার লক্ষ্যবস্তু বানাচ্ছে। আমাদের (ফিলিস্তিনি রেড ক্রিসেন্ট) প্রতিটি অ্যাম্বুলেন্সের উপরে একটি স্পষ্ট প্রতীক রয়েছে। এটি যে কোনো জায়গা থেকে, আকাশ থেকেও খুব স্পষ্টভাবে তা দেখা যায়। আন্তর্জাতিক মানবিক আইন অনুযায়ী, এই প্রতীকটিকে সম্মান করা উচিত। কিন্তু ইসরায়েল ইচ্ছাকৃতভাবেই আমাদের অ্যাম্বুলেন্সগুলোকে টার্গেট করেছে।’
অবরুদ্ধ গাজায় নিরাপদে চিকিৎসা সহায়তায় মানবিক করিডর স্থাপনের আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।