আনোয়ারা। চট্টগ্রাম জেলার কর্ণফুলী নদী ও সমুদ্র উপকূলবর্তী একটি উপজেলা। গ্রাম নির্ভর এই উপজেলাটি এখন নতুন শহরে রূপ নিয়েছে। আর এটি সম্ভব হয়েছে বঙ্গবন্ধু টানেলের মাধ্যমে। চট্টগ্রাম মহানগরীর পতেঙ্গা সৈকত এলাকা থেকে বঙ্গবন্ধু টানেলের শুরু হয়ে কর্ণফুলী নদীর তলদেশ হয়ে সমাপ্তি ঘটেছে আনোয়ারা উপজেলা অংশে। এর মাধ্যমে চট্টগ্রাম নগরের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে আনোয়ারা।
চীনের সাংহাই নগরীর মতো চট্টগ্রামকে ‘ওয়ান সিটি টু টাউন’ হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্য নিয়েই বঙ্গবন্ধু টানেল নির্মাণ করা হয়। এরই সুবাদে আনোয়ারা উপজেলা এখন চট্টগ্রামের নতুন শহর হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে।
শনিবার (২৮ অক্টোবর) সকাল ১১টা ৪০ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আনুষ্ঠানিকভাবে বঙ্গবন্ধু টানেল উদ্বোধন করেন। এর ফলে আনোয়ারা এখন দ্বিতীয় শহরের মর্যাদা লাভ করেছে।
এ প্রসঙ্গে আনোয়ারা সংসদীয় আসনের সাংসদ সদস্য ও ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ জানান, বঙ্গবন্ধু টানেল নির্মাণের ফলে আনোয়ারাসহ সমগ্র দক্ষিণ চট্টগ্রামের যুগান্তকারী উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। এই টানেলে আনোয়ারাকে নতুন শহরের রূপ দিয়েছে। টানেল হওয়ার ফলে এই অঞ্চলের শিল্প উন্নয়ন, পর্যটন এবং দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ সম্ভাবনার নতুন দ্বার খুলে গেছে। সারা বিশ্ব এখন চট্টগ্রামের পাশাপাশি আনোয়ারাকে চিনবে নতুনভাবে।
তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনা সরকারের ১৫ বছরের শাসন আমলে আনোয়ারা-কর্ণফুলীসহ সারাদেশে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। এর মধ্যে কর্ণফুলী টানেল উন্নয়নের নতুন মাইল ফলক। উন্নয়নের সরকার হচ্ছে আওয়ামী লীগ সরকার। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বপ্ন দেখেছেন সোনার বাংলা বির্নিমাণে, তাঁরই কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেই পূরণ করেছেন।
আনোয়ারা উপজেলার চাতরী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও স্থানীয় ব্যবসায়ী মোহাম্মদ ইয়াছিন হিরু বলেন, বঙ্গবন্ধু টানেল হওয়াতে আমাদের পুরো আনোয়ারার চিত্র কয়েকবছরে বদলে গেছে। একসময় মানুষ এখান থেকে শহরে বা উন্নত স্থানের দিকে ছুটতেন। টানেল হওয়াতে সব কিছুর গুরুত্ব বেড়ে গেছে। ব্যবসা বাণিজ্য ও শিল্প সম্ভাবনা বেড়ে যাওয়ার এই অঞ্চলের জমির দাম অনেক বেড়ে গেছে। ২ লাখ টাকার জমি ৫০ লাখ টাকা মূল্য পাচ্ছেন এই অঞ্চলের মানুষ।
তিনি আরও বলেন, এক সময় আনোয়ারা থেকে শহরে গিয়ে ব্যবসা বাণিজ্যে বিনিয়োগ করতেন মানুষজন। এখন দেশের বিভিন্ন শহর থেকে ব্যবসায়ীরা আনোয়ারায় বিনিয়োগ করতে আসছেন। কর্ণফুলী টানেলে পুরো আনোয়ারা কর্ণফুলী উপজেলার গুরুত্ব বাড়িয়ে দিয়েছে। এটা আমাদের জন্য গর্বের।