সময়মতো অবাধ, সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন করা হবে বলে বিদেশি কূটনীতিকদের জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। সোমবার (৩০ অক্টোবর) কূটনীতিকদের জন্য আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে লিখিত বক্তব্যে এ কথা জানান তিনি।
মোমেন বলেন, সময়মতো অবাধ, সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন করা এবং সংবিধানে নির্দেশিত গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া মেনে চলার ক্ষেত্রে সরকার দৃঢ় ও দ্বিধাহীন থাকবে।
গত শনিবার ঢাকায় বিএনপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে সংগঠিত সহিংসতার পর সৃষ্ট রাজনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে জানানোর জন্য বিদেশি কূটনীতিকদের এই ব্রিফিংয়ে ডাকা হয়। রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অনুষ্ঠিত এই ব্রিফিংয়ে ঢাকায় অবস্থিত সব বিদেশি দূতাবাস, জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রধানেরা উপস্থিত ছিলেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন তার লিখিত বক্তব্যে ২৮ অক্টোবরের সহিংসতার জন্য বিএনপিকে অভিযুক্ত করেন। তিনি বলেন, বিএনপির সহিংসতা ও ভাঙচুরের দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। তারা ২৮ অক্টোবর একই কাজ করেছে।
সরকার ২৮ অক্টোবরের সহিংসতায় হতবাক হয়েছে মন্তব্য করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বিএনপি এখন আবার সহিংসতা চালাতে মাঠে নেমেছে। অতীত থেকে তারা কিছুই শেখেনি।
২৮ অক্টোবর বিএনপির কর্মীদের সহিংসতার বিবরণ দূতাবাসগুলোকে পাঠানো হয়েছে বলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান। এ বিষয়ে পুলিশের তৈরি করা কিছু প্রমাণ আজ ব্রিফিংয়ের সময় কূটনীতিকদের দেওয়া হয়।
নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ২০১৩, ২০১৪ ও ২০১৫ সালেও বিএনপি ব্যাপক সহিংসতা করেছে এমন অভিযোগ করেন মোমেন। তবে এবার দলটি পুলিশ ও বিচার বিভাগকে লক্ষ্যবস্তু বানিয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, প্রধান বিচারপতির বাসভবন ও বিচারপতিদের বাসস্থানে হামলা, পুলিশ হাসপাতালে আগুন দেওয়া ও ছয়টি পুলিশ বক্স পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার থেকে বিএনপির ডাকা তিন দিনের অবরোধের কথা উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের তথ্য অনুযায়ী, প্রতিদিনের হরতাল-অবরোধে প্রায় ১ হাজার ৬০০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়।
প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম ও পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন ব্রিফিংয়ে অংশ নেন।
যুক্তরাষ্ট্রসহ সাতটি দেশ সোমবার ২৮ অক্টোবরের সহিংসতা নিয়ে একটি বিবৃতি দিয়েছে। এ অবস্থায় কূটনীতিকেরা সরকারের বক্তব্যের সঙ্গে একমত হয়েছেন বলে মনে করেন কিনা, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্ন ছিল আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের কাছে। জবাবে মন্ত্রী বলেন, নীরবতার অর্থ পুরোপুরি একমত হওয়া নয়। সরকারের বক্তব্য তাদের জানানো হয়েছে। ওনাদের কাছ থেকে কোনও বিবৃতি আশা করি না।
এসময় শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক, সহিংসতামুক্ত ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে আইনমন্ত্রী উল্লেখ করেন।