ফিলিস্তিনের মানবাধিকারবিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিবেদক ফ্রান্সেসকা আলবানিজ গাজায় ‘গণহত্যামূলক অপরাধ’ প্রতিরোধে কাজ করতে ব্যর্থ হওয়ার জন্য অস্ট্রেলিয়া ও অন্যান্য পশ্চিমা দেশগুলোকে অভিযুক্ত করেছেন।
মঙ্গলবার অস্ট্রেলিয়ার ন্যাশনাল প্রেস ক্লাবে এক বক্তৃতায় আলবানিজ বলেন, ‘গাজা সংকট বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় প্রায় সম্পূর্ণভাবে পঙ্গুত্ব বরণ করেছে। বলতে বাধ্য হচ্ছি যে, জাতিসংঘ তার সৃষ্টির পর থেকে সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক ও মানবিক ব্যর্থতা দেখিয়েছে। স্বতন্ত্র সদস্য রাষ্ট্রগুলো বিশেষ করে পশ্চিমা দেশগুলো এবং অস্ট্রেলিয়াও এর ব্যতিক্রম নয়। ফিলিস্তিনিরা অস্তিত্বের হুমকি মোকাবিলা করছে। ইসরায়েলের আত্মরক্ষার অধিকারকে সমর্থন করা পশ্চিমা দেশগুলোর পক্ষে যথেষ্ট ছিল না।’
আইনি দৃষ্টিকোণ তিনি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক আইনে হামাসের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের আত্মরক্ষার কোনো অধিকার নেই। ইসরায়েল ‘যুদ্ধাপরাধ’ করছে, যার জবাবদিহি করতে হবে।’
তার মতে, যুদ্ধের আইনে আত্মরক্ষার দাবি ইসরায়েল করতে পারে না। কারণ আইন অনুসারে, আত্মরক্ষার দাবি কেবলমাত্র অন্য রাষ্ট্রের হুমকির মুখে নির্ধারিত হতে পারে।
আলবানিজ বলেন, ‘ইসরায়েল তার দখলকৃত অঞ্চল থেকে উদ্ভূত হুমকির বিরুদ্ধে আত্মরক্ষার অধিকার দাবি করতে পারে না; এমন একটি অঞ্চল থেকে যা যুদ্ধবাদীর দখলে রয়েছে।’
ফিলিস্তিনের মানবাধিকারবিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিবেদক তার বক্তব্যে আরও বলেন, ‘ইসরায়েলকে যা করার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল তা হল আইন-শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করা, আক্রমণ প্রতিহত করা, যারা হামলা চালাচ্ছে তাদের নিরস্ত্র করা এবং তারপর আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থা নিয়ে এগিয়ে যাওয়া… যুদ্ধ না করা। কিন্তু (গাজায়) যা করা হচ্ছে তা ভুল… আর কত মানুষের মৃত্যু দরকার?’
ফিলিস্তিনি এবং ইসরায়েলি উভয়ের শান্তি ও নিরাপত্তায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় নৈতিকভাবে ব্যর্থ হয়েছে বলে মনে করেন তিনি। আলবানিজ গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি, মানবিক করিডোর স্থাপন, অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা ও ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানান।
এদিকে আলবানিজের বক্তব্যকে ‘ভিখারিদের বিশ্বাস’ বলে অভিহিত করেছেন অস্ট্রেলিয়ান ইহুদি কার্যনির্বাহী পরিষদের উপপ্রধান পিটার ওয়ারথেইম।
তিনি বলেন, ‘মিসেস আলবেনিজ কি আশা করেছিলেন যে, ইসরায়েল কেবল বসে থাকবে এবং হামাসকে হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেবে? কিংবা গাজায় বসে পুনরায় আক্রমণের জন্য সুসংগঠিত হওয়ার সুযোগ দেবে?’
তার দাবি, জাতিসংঘের সনদ ও প্রথাগত আন্তর্জাতিক আইন, উভয়ই সশস্ত্র হামলার প্রতিক্রিয়ায় শক্তি প্রয়োগে একটি রাষ্ট্রের অন্তর্নিহিত অধিকারকে স্পষ্টভাবে নিশ্চিত করে। সেই আক্রমণটি অন্য রাষ্ট্র থেকে বা হামাসের মতো সংগঠন থেকে উদ্ভূত হোক না কেন।