বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘আমাদের এখন চ্যালেঞ্জ যাচ্ছে। ইশতেহার বাস্তবায়নেও অনেক প্রতিবন্ধকতা আসতে পারে, বাধা-বিঘ্ন আসতে পারে। কারণ যারা এই নির্বাচন বর্জন করেছে তারা পিছু হটেনি। তারা আজকে নতুন করে আবার ষড়যন্ত্র শুরু করে দিয়েছে। এ সরকার যাতে থাকতে না পারে সেজন্য তারা বিদেশি বন্ধুদের দিকে তাকিয়ে আছে কবে কম্বোডিয়ার মতো একটা নিষেধাজ্ঞা আসে।’
শনিবার (১৩ জানুয়ারি) দুপুরে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
সেতু মন্ত্রী বলেন, আমাদের প্রধানমন্ত্রী তিনি কিন্তু কোনো নিষেধাজ্ঞা, কোনো ভিসানীতি পরোয়া করেন না। সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, শত্রুতা নয় এই নীতিতে শেখ হাসিনা সরকারের কার্যাবলি পরিচালিত হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, আজকে যে পরিস্থিতি, আমরা রাজনীতি দিয়েই মোকাবিলা করতে চাই। কিন্তু রাজনীতি যদি কেউ সন্ত্রাস, সংঘাত, সহিংসতার উপাদান যুক্ত করে তখন সেখানে উদ্ধুদ্ধ পরিস্থিতি মোকাবিলায় যা যা করতে হবে সুষ্ঠুভাবে, সুন্দরভাবে দেশ পরিচালনা জন্য আমাদের সব কিছুই করতে হবে। কিছু প্রশাসনিকভাবে মোকাবিলার প্রশ্ন আছে, কিছু আমাদের দলীয় কর্মসূচি দিয়ে তাদের আন্দোলন মোকাবিলা করেছি। এখনো আমাদের কর্মসূচি যথারীতি চলবে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘রাজনীতি তো আর বন্ধ থাকবে না। রাজনীতি চলবে, তবে আমরা বিরোধী দলকে রাজনীতি দিয়েই মোকাবিলা করতে চাই। তারা গর্জন করবে বন্দুক দিয়ে আর আমরা জুঁই ফুলের গান গাইবো এটা হবে না।
এর আগে, সকাল ৯টায় গণভবন থেকে সড়ক পথে টুঙ্গিপাড়ার উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সকাল সাড়ে ১১টার দিকে টুঙ্গিপাড়ায় এসে পৌঁছান তিনি। পরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধি সৌধ বেদিতে পুস্পস্তাপর্ক অর্পণ করে গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে কিছুক্ষণ নিরবে দাঁড়িয়ে থাকেন প্রধানমন্ত্রী। এসময় তিন বাহিনীর একটি চৌকস দল গার্ড অব অনার প্রদান করেন। পরে বোন শেখ রেহানাকে সঙ্গে নিয়ে বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের শহিদ সদস্য এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে অত্মত্যাগকারী শহিদের আত্মার শান্তি কামনা করে ফাতেহা পাঠ ও বিশেষ মোনাজাতে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী। পরে দলীয় প্রধান হিসাবে মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী পরিষদের সদস্যদের নিয়ে বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে শ্রদ্ধা জানান।
এসময় অন্যদের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, অর্থ মন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী, আইন মন্ত্রী আনিসুল হক, শিল্প মন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যাটন মন্ত্রী মুহাম্মদ ফারুক খান, পররাষ্ট্র মন্ত্রী মোহাম্মদ হাসান মাহমুদ, সমাজকল্যাণ মন্ত্রী ডা. দীপু মনি, খাদ্য মন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার, পরিকল্পনা মন্ত্রী আব্দুস সালাম, ধর্ম মন্ত্রী মো. ফরিদুল ইসলাম, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবীর নানক, স্বাস্থ মন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন, রেলমন্ত্রী মো. জিল্লুল হাকিম, জনপ্রশাসন মন্ত্রী মো. ফরহাদ হোসেন, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী, শিক্ষা মন্ত্রী মহিবুর হাসান চৌধুরী, শেখ হেলাল উদ্দিন এমপি, শেখ সালাউদ্দিন জুয়েল এমপিসহ মন্ত্রী পরিষদের সদস্য, প্রতিমন্ত্রীগণ ও ৫ উপদেষ্টা উপস্থিত ছিলেন।
শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে বঙ্গবন্ধু ভবনে অবস্থান করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ বিকেল ৩টায় টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে নেতাকর্মীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন প্রধানমন্ত্রী। পরে তিনি নিজ বাড়িতে রাত যাপন করবেন।
সফরের দ্বিতীয় দিন রোববার (১৪ জানুয়ারি) দুপুর ২টায় সড়ক পথে টুঙ্গিপাড়া থেকে কোটালীপাড়া উপজেলায় যাবেন শেখ হাসিনা। দুপুর আড়াইটায় উপজেলা পরিষদ মাঠে নেতাকর্মীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। পরে সেখান থেকে বিকেলে সড়ক পথে ঢাকার উদ্দেশ্যে কোটালীপাড়া ত্যাগ করবেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগমনকে কেন্দ্র করে গোপালগঞ্জ জেলার মোড়ে মোড়ে টাঙানো হয়েছে ব্যানার, ফেস্টুন। প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে তোড়ন। এছাড়া নেওয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা।