ফিলিস্তিনিদের সমর্থনকারী সাংবাদিকরা পশ্চিমা সংবাদ সংস্থাগুলোর চাপ, বরখাস্ত এবং হুমকির সম্মুখীন হচ্ছেন। মঙ্গলবার বার্তা সংস্থা আনাদোলু এ তথ্য জানিয়েছে।
ইসরায়েল যখন গাজা উপত্যকায় হামলা চালিয়ে যাচ্ছে এবং এ ঘটনা অভূতপূর্ব মানবিক সঙ্কটের সৃষ্টি করছে –তখন সংবাদমাধ্যমগুলোতে আরেকটি যুদ্ধ চলছে।
নেতৃস্থানীয় পশ্চিমা সংবাদ সংস্থাগুলো তাদের কর্মীদের ফিলিস্তিনি বর্ণনা কাঁটছাঁট করতে এবং ইসরায়েলের নৃশংসতা গোপন করার জন্য চাপ দিচ্ছে। যে সাংবাদিকরা ইসরায়েলের কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে তাদের আওয়াজ তুলেছেন তারা তাদের বিবেক এবং চাকরির মধ্যে যেকোনো একটিতে বেছে নিতে বাধ্য হচ্ছেন।
এই সাংবাদিকদের মধ্যে প্রতিবাদ জানিয়ে বিবিসিকে পদত্যাগ করেছেন বাসাম বুনেনি। ফেসবুক থেকে গাজা যুদ্ধ নিয়ে নিজের পোস্ট সরাতে অস্বীকৃতি জানানোয় গ্লোবাল নিউজ থেকে বরখাস্ত হয়েছেন জাহরা আল-আখরাস। তারা দুজনই আনাদোলুর সঙ্গে কথা বলেছেন।
গাজায় ইসরায়েলের হামলার বিরুদ্ধে পশ্চিমা সংবাদমাধ্যমগুলোর অবস্থানের সমালোচনা করেছেন বুনেনি।
পশ্চিমা সংবাদমাধ্যমের অবস্থানকে ‘মর্মান্তিক’ এবং ‘হতাশাজনক’ বর্ণনা করে বুনেনি বলেছেন, ‘আমরা দেখেছি কী পরিমাণ সংবাদে অনেক যাচাইযোগ্য তথ্য কাঁটছাঁট করা হয়েছে, যার মধ্যে মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলোর প্রতিবেদন কিংবা জাতিসংঘের মহাসচিবের বিবৃতিও রয়েছে।’
বুনেনি জানান, পশ্চিমা সংবাদমাধ্যমে গাজার বেসামরিক নাগরিকদের এবং ইসরায়েলের বেসামরিক নাগরিকদের ভিন্নভাবে উপস্থাপন করা হয়। সংবাদমাধ্যমে গাজাবাসীদের দানব হিসাবে উপস্থাপন করা হয়।
জাহরা আল-আখরাস পশ্চিমা সংবাদ সংস্থাগুলোর মনোভাবের সমালোচনা করে বলেছেন, ‘ফিলিস্তিনপন্থী সাংবাদিক হিসাবে, আমরা প্রায়ই হুমকির মুখোমুখি হই এবং আমাদের চুপ করানোর চেষ্টা হয়। যখন আমরা স্থিতাবস্থাকে চ্যালেঞ্জের চেষ্টা করি, তখন আমাদের ভারসাম্যহীনতার অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয় এবং পক্ষপাতদুষ্ট হওয়ার অভিযোগ আনা হয়।
তিনি বলেন, ‘যদি আমরা পশ্চিমা সংবাদমাধ্যমের পক্ষপাতদুষ্ট সম্প্রচারের বিরোধিতা করার ওপর জোর দেই, তাহলে আমাদের সেন্সর করা হয়, বিষয় এবং এজেন্ডা থেকে বিচ্যুত করা হয়। আমাদের ফিলিস্তিনের বিষয়ে সংবাদ করতে নিষেধ করা হয় এবং যদি আমরা আরও জোর দেই, তাহলে আমাদের সংবাদের দুনিয়া থেকে বহিষ্কার করা হয়, আমাদের চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়।’