জাহানারা বুলা।
তুমি-আমি নাই বলি আজ,
এবার বলুক পাখিরা,
বলুক গুল্ম, লতা, ঘাস, ফুল, সমুদ্র, আকাশ, বৃক্ষেরা।
আকাশের দিকে চেয়ে দেখ-
পান্ডুর, বিবর্ণতায় ছেয়ে গেছে মেঘ!
চেয়ে দেখ, উচ্ছ্বাস বিহীন সমুদ্রের ঢেউ! হয়তো,
সাগরের বুকে নির্ঘুম ঝিনুক –
অন্তর তটে মুক্তোও নেই অবরুদ্ধ তার!
প্রকৃতিতে যত দূষণ তা কেবল মানুষেরই
রীতিনীতিবিরুদ্ধতায়!
বাষ্পদূষণ, শব্দদূষণ, জলদূষণের দায়ভার মানুষেরই।
তাই, চলো ঘরে ফিরে যাই –
নিসর্গ শুদ্ধির আহবান মানি!
ধুলি-ধোঁয়ার আস্তরণ মুছে দিয়ে নীলিমাকে নীল
হ’তে দিই,
বৃক্ষদের ফিরিয়ে দিই পাওনা সবুজ,
পাখিদের ঠোঁটে ঠোঁটে গেঁথে দিই হারানো সুর,
নিস্তব্ধতার স্বপ্ন পূরীতে ওদের গাইতে বলি –
অভয় অরণ্য এনে দিই।
এর পর, দাঁড়িয়ে জানালায় কান পেতে দিও,
দৃষ্টি মেলে দিও অশ্বত্থের ডালে-
শাখা থেকে শাখায় নেচে নেচে গাইবে ওরা,
আকাশের নীল ছুঁয়ে বেঁচে থাকার অনিবন্ধিত
পাখা মেলে ছুটে যাবে সুদুরের পথে!
আমরা ঘর মুখি হ’লে
সাগরের উদ্বেল ঢেউ পাড় ছুঁয়ে চলে যাবে বৌচি
খেলার মত করে!
শুকতির বুকে মুক্তোরা ঘুমোবে নিরবে,
পরিব্রাজককূল একদিন আবার গল্প বাঁধবে
নাবিকের মুক্তো ভরা কোঁচড়ের!
বিজ্ঞানও বিভ্রান্ত হবে না আর বৈশ্বিক উষ্ণতা নিয়ে!
মানুষের ছন্দহীন চলনেবলনে যে শৃংখল
ভেঙেছিলো প্রকৃতি,
তার সবটাই ফিরে পাবে লকডাউন পৃথিবীর কাছে।
ঘরবন্দি হবো যখন অনির্দিষ্ট নির্জনতা মুড়ে,
অনির্বান মঙ্গলদীপ জ্বালিয়ে রাখবো
তখন আশার সলতে পুড়িয়ে!