জলবায়ু পরিবর্তন ও প্রাকৃতিক দুর্যোগকে মাথায় রেখে ঘূর্ণিঝড় আম্ফান দূর্গত উপকূলীয় এলাকায় স্থায়ী ও টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন নাগরিক সমাজ ও পরিবেশ আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ। তারা বলেছেন, টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের পাশাপাশি বাঁধ রক্ষণাবেক্ষনে জরুরী তহবিল গঠন ও বাঁধ ব্যবস্থাপনায় স্থানীয় সরকারকে সম্পৃক্ত করতে হবে। রোববার (২৮ জুন) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি চত্ত্বরে নাগরিক সংগঠন সুন্দরবন ও উপকুল সুরক্ষা আন্দোলন এবং বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা লিডার্স আয়োজিত এক মানববন্ধন ও সমাবেশ থেকে এই দাবি তুলে ধরা হয়। করোনা স্বাস্থ্যবিধি মেনে অনুষ্ঠিত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সুন্দরবন ও উপকূল সুরক্ষা আন্দোলনের সমন্বয়ক নিখিল চন্দ্র ভদ্র।
রোববার (২৮ জুন) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি চত্ত্বরে নাগরিক সংগঠন সুন্দরবন ও উপকুল সুরক্ষা আন্দোলন এবং বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা লিডার্স আয়োজিত এক মানববন্ধন ও সমাবেশ থেকে এই দাবি তুলে ধরা হয়। করোনা স্বাস্থ্যবিধি মেনে অনুষ্ঠিত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সুন্দরবন ও উপকূল সুরক্ষা আন্দোলনের সমন্বয়ক নিখিল চন্দ্র ভদ্র। সমাবেশে বক্তৃতা করেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা)’র মিহির বিশ্বাস, উন্নয়ন ধারা ট্রাস্টের আমিনুর রসুল বাবুল, কেএনএইচ জার্মানির প্রতিনিধি মনিরুজ্জামান মুকুল, স্ক্যান সভাপতি জাহাঙ্গীর নাকির, সাংবাদিক আব্দুল্লাহ মুয়াজ ও তৌফিক অরিন, এনসিসিবি’র মাহবুবুর রহমান অপু, লিডার্সের খাদিমুল ইসলাম, উন্নয়ন কর্মী ইমরান হোসেন প্রমূখ।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, ঘূর্ণিঝড় আম্ফান আবারো জানান দিলো, যতই সংস্কার করা হোক না কেন, ৬০ দশকে তৈরি করা আয়তনে ছোট উপকূলীয় বেড়িবাঁধ কোন ভাবেই ওই অঞ্চলকে সুরক্ষা দিতে পারবে না।
তাই দ্রুত জলবাযু পরিবর্তন ও প্রাকৃতিক দূর্যোগকে বিবেচনায় রেখে নতুন পরিকল্পনায় বাঁধ নির্মাণ করতে হবে। সেক্ষেত্রে বাঁধের নিচে ১০০ ফুট ও উপরে ৩০ ফুট চওড়া করতে হবে। যার উচ্চতা ৩০ ফুট করার সুপারিশ করেন তারা।
বক্তারা বলেন, করোনা পরিস্থিতির মধ্যে ঘূর্ণিঝড় আম্ফান ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় ডেকে এনেছে। দূর্গত এলাকার মানুষ পানিবন্দী অবস্থায় মানবেতর জীবন-যাপন করছে। কিন্তু সাধারণ মানুষের দূর্ভোগ লাঘবে কার্যকর পদক্ষেপ নেই।
তারা বলেন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের বাঁধ রক্ষণাবেক্ষণে তাদের কোন ভূমিকা নেই। অথচ এই বাঁধ ভেঙে গেলে যে চরম দুর্যোগ তৈরী হয় তার ধকল স্থানীয় সরকারকে পোহাতে হয়। তাই বাঁধ ব্যবস্থাপনার জন্য ইউনিয়ন পরিষদ ও উপজেলা পরিষদের আওতায় একটি জরুরী তহবিল গঠন করতে হবে। বাঁধ ব্যস্থাপনায় স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদকে সম্পৃক্ত করতে হবে।
সংবিধান অনুযায়ী প্রতিটি মানুষের সুপেয় পানি সরবরাহ নিশ্চিত করার দাবি জানিয়ে বক্তারা বলেন, উপকুলীয় এলাকায় লবণ পানির বাগদা চিংড়ি রপ্তানী করে সরকার প্রতিবছর প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে। কিন্তু সেই চিংড়ি চাষ এলাকায় লবণপানির কারনে যে দীর্ঘমেয়াদী সুপেয় পানির সংকট তৈরী হয়েছে, সেই সংকট উত্তরণে যথেষ্ট উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। সুপেয় পানির জন্য উপকূলীয় জনগণকে এনজিওদের ত্রাণের লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। এটি অমানবিক ও অমর্যাদাকর।বিশ্বব্যাপী করোনা পরিস্থিতির ভয়াবহতার মধ্যে গত ২০ মে সুপার সাইক্লোন আম্ফান উপকূলীয় অঞ্চলে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে। ঘূর্ণিঝড় ও জ্বলোচ্ছাসে বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে খুলনা-সাতক্ষীরা অঞ্চলে কয়েক লাখ মানুষ পানিবন্দী আছে। উপকূলীয় এলাকায় সুপেয় পানির ভয়াবহ সংকট দেখা দিয়েছে।
ফলে জনজীবন বিপর্যস্থ হয়ে পড়েছে। এমতাবস্থায় ঘূর্ণিঝড় দুর্গত উপকূলীয় মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে টেকসই ও স্থায়ী বেড়িবাঁধ নির্মাণের দাবিতে আন্দোলন কর্মসূচী রেখেছে বিভিন্ন সংগঠন।