|| এবিএম সালেহ উদ্দীন ||
বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের উন্নয়ন, সম্প্রসারণ এবং উৎকর্ষ সাধনে ভারতবর্ষে যে কয়জন ভাষাবিজ্ঞানী, ভাষাতত্ত্ববিদ, দার্শনিক ও শিক্ষাবিদ অবিস্মরণীয় অবদান রেখেছেন জ্ঞানতাপস ডক্টর মুহম্মদ শহীদুল্লাহ (১৮৮৫-১৯৬৯) তাঁদের মধ্যে অন্যতম। ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ উপমহাদেশের শ্রেষ্ঠতম শিক্ষাবিদ, ভাষাবিশারদ, বহুভাষাবিদ, ভাষাবিজ্ঞানী ও প্রখ্যাত আইনজ্ঞ হিসেবে ছিলেন সর্বশীর্ষে। ১৮৮৫ সালের ১০ জুলাই পশ্চিমবঙ্গের চব্বিশ পরগনা জেলার পেয়ারা গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। পিতা মফিজউদ্দীন আহমেদ ছিলেন পীর গোরাচাঁদ দরগাহর খাদেম। মাতা হুরুন্নেছা ছিলেন তৎকালীন সময়কার এক সম্ভ্রান্ত পরিবারের কন্যা। শহীদুল্লাহ নামটি তাঁর মা পছন্দ করে রেখেছিলেন। পুত্র জন্ম নেওয়ার পর আকিকা হয়েছিল ‘মুহম্মদ ইব্রাহীম’ নামে। পরে মা মনে করলেন শহীদে কারবালার চাঁদে তাঁর পুত্র গর্ভে এসেছিল। শহীদুল্লাহ নামটিই যথার্থ এবং ক্ষণজন্মা হবে। পরবর্তীতে তাঁর প্রাণপ্রিয় মায়ের ধারণাই সত্যি বলে পরিগণিত হয়।
শিশুকাল থেকেই তাঁর ভেতরে বিস্ময়কর প্রতিভা পরিলক্ষিত হয়। শৈশবের স্কুলজীবন থেকে মেধা ও মননশীলতায় স্বাক্ষর পাওয়া যায়। একসময় তিনি পৈতৃক পেশা থেকে বেরিয়ে আসেন এবং ভাষা ও জ্ঞানচর্চায় ব্যতিক্রমী অধ্যবসায় শুরু করেন। শিশুকালেই উর্দু, ফারসি ও আরবি ভাষা শেখেন এবং স্কুলে সংস্কৃত পড়েন। ছোটবেলা থেকেই তাঁর মধ্যে ভাষা সম্পর্কে জ্ঞান আহরণের অদম্য আগ্রহ ছিল। তাঁকে বলা হতো ‘চলন্ত এনসাইক্লোপেডিয়া’, যা কখনো থেমে যায়নি। ১৯০৪ সালে হাওড়া স্কুল থেকে এন্ট্রাস পাস করার পর ১৯০৬ সালে কলকাতা প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে এফএ (এইচএসসি) পাস করেন। এন্ট্রাস পাসের পর তিনি বিভিন্ন ভাষার প্রতি অতি উৎসাহী ও আগ্রহী হয়ে ওঠেন এবং বিদেশি ভাষার ওপর পড়াশোনা শুরু করেন। একপর্যায়ে তিনিই পৃথিবীর বহুভাষাবিদ ও ভাষাপণ্ডিত হিসেবে বিশ্বে পরিচিত ও প্রতিষ্ঠিত হন। ভারতবর্ষে ভাষাজ্ঞানে তাঁর সমকক্ষ কেউ ছিল না।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে সংস্কৃত নিয়ে এমএ পড়তে চাইলে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃত বিভাগের অধ্যাপক পণ্ডিত সত্যব্রত সামশ্রমী মুসলিম ছাত্রকে পড়াতে অস্বীকৃতি জানান। এটি কোর্ট পর্যন্ত গড়ায়। পড়াশোনার যেন ব্যাঘাত না হয়, সে জন্য কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য স্যার আশুতোষ মুখার্জীর অনুরোধে তিনি ভাষাতত্ত্বে ভর্ত্তি হন এবং কৃতিত্বের সঙ্গে (১৯১২) এমএ পাস করেন। পরবর্তী সময়ে কোর্ট থেকে ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহর পক্ষে রায় আসে। তিনি জয়ী হয়ে একই বিশ্ববিদ্যালয়ে সংস্কৃত বিষয়ে গবেষণার দায়িত্ব পালন করেন। উপমহাদেশে ইহা একটি স্মরণীয় ঘটনা। তিনিই প্রথম মুসলিম ছাত্র, যিনি ১৯১০ সালে কলকাতা সিটি থেকে সংস্কৃত ভাষায় বিএ (সম্মান) পাস করেন। ১৯১২ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তুলনামূলক ভাষাতত্ত্বে এমএ পাস করেন এবং একই বিশ্ববিদ্যালয়ে আইনের ওপর পড়াশোনা করেন।
তিনি কখনো কাজ ছাড়া বসে থাকতেন না। ছাত্রজীবন শেষ না হতেই শিক্ষকতার কাজ শুরু করেন। প্রকাশ থাকে যে, এরপর তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (১৯২১ সাল থেকে) গবেষণা ও শিক্ষকতার কাজ করেন। ১৯৪৪ সাল পর্যন্ত তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা সংস্কৃত বিভাগে অধ্যাপক ও রিডারের দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন। ১৯৪৪ সালের পর তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়সহ বাংলাদেশ, ভারত, করাচি, প্যারিসসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কাজ করেন। এছাড়া বাংলা একাডেমিতে বাংলা অভিধান ও আঞ্চলিক ভাষার অভিধান তৈরিতে প্রধান দায়িত্ব পালন করেন। তিনিই সর্বপ্রথম আঞ্চলিক ভাষার অভিধান প্রণয়নে অসামান্য অবদান রাখেন। শুধু তা-ই নয়, একসময় তিনি করাচি বিশ্ববিদ্যালয়ে উর্দু অভিধান বোর্ডের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। জীবনের একটি মুহূর্তও তিনি আরাম-আয়েশে কাজ থেকে নিষ্ক্রিয় ছিলেন না। পরে ১৯২৮ সালে প্যারিসের সরোবন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন।
বাংলা ভাষার উৎপত্তি অনুসন্ধানের প্রতি গভীর মনোনিবেশ করেন। যদি কোনো প্রশ্ন আসে যে, বাংলা ভাষার ব্যাকরণ রচনায় কার অবদান বেশি এবং কে ছিলেন পথিকৃৎ? উত্তর আসবে ‘রামমোহন রায় এবং ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ। আর বাংলা সাহিত্যের ভাষাবিজ্ঞানী হিসেবে প্রথমে ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহর নাম। বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ আবুল কালাম মন্জুর মোরশেদ বিবিসির এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘বাংলা ভাষার গবেষণা ও সাহিত্যের জন্য ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। তিনি বাংলা ভাষার ইতিহাস দুই থণ্ডে লিখেছিলেন। একসময় বিদ্যাপতির যে পদগুলো ছিল, সেগুলো তিনি সম্পাদনা করেন এবং তাঁর একটি বিরাট কৃতিত্ব হচ্ছে প্রাচীন বাংলার যে প্রথম নিদর্শন চর্যাপদ, সেই চর্যাপদ তিনি সম্পাদনা করেছিলেন। শুধু তা-ই নয়, বাংলা ভাষার সম্প্রসারণ এবং আধুনিকায়নেও তাঁর অবদান অবিস্মরণীয়। নিজের মাতৃভাষা বাংলার প্রতি তিনি ছিলেন অকৃতদার ও অকুণ্ঠ যত্নশীল। বাংলা ভাষার জাগরণে তিনি ছিলেন আপসহীন ও সুদৃঢ়।
বাংলা ভাষার স্বাধিকার আন্দোলনে সর্বপ্রথম কথা বলেন এবং কলম ধরেছেন ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ। তিনি ছিলেন প্রাচ্যের অন্যতম ভাষাবিজ্ঞানী। মাতৃভাষা ছাড়াও তিনি ১৮টি ভাষা জানতেন। প্রতিটি ভাষায় লিখন, পঠন ও পড়াতে পারতেন। এজন্য ইউরোপের দেশসমূহ তথা প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যে তাঁর সুনাম ও সুখ্যাতি ছড়িয়ে পড়েছিল। তিান কস্মিনকালেও বাংলা ভাষাকে ভুলে যাননি। বাংলা ভাষার প্রতি তাঁর দরদ ও ভালোবাসা ছিল আকাশ পরিমাণ। এই ভাষাকে যেমন ভালোবাসতেন, তেমনি বাংলা ভাষা, সংস্কৃতি ও সাহিত্যের উন্নয়নে তাঁর ভূমিকা অপরিসীম। ভাষার অভিধান প্রণয়ন এবং ধ্বনিতত্ত্বেও বিশেষ অবদান রাখেন। বাংলা ভাষার গুরুত্ব তাঁর এতই বেশি যে, তিনি আজীবন এই ভাষার উন্নয়নে ছিলেন সদা ব্যস্ত ও ব্যাপৃত।
উদাহরণস্বরূপ উল্লেখ করা যায়, তিনি যখন বিএ পাস করেন, তখন তাঁর বিয়ে হয়। তখন রক্ষণশীল পরিবারে বাংলা শিক্ষাদান করা হতো না। তা ছিল নিষিদ্ধ এবং খুব কঠিন! তাঁর সহধর্মিণী আরবি ও উর্দু জানতেন, কিন্তু বাংলা ভাষা সম্পর্কে জ্ঞান ছিল না। তখন তিনি গোপনে স্ত্রীকে বাংলা পড়ানো শুরু করেন এবং তিনি স্ত্রীকে বিএ পাস করালেন। মাতৃভাষার প্রতি এমন অনুরাগী হয়েও বিস্ময়করভাবে তিনিই ছিলেন শ্রেষ্ঠতম বহুভাষাবিদ। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে থাকা ও পরিভ্রমণ এবং অবস্থান করা সত্ত্বেও কখনো বাংলা ভাষা, বাংলা সংস্কৃতিকে ভুলে যাননি। তিনি ছিলেন নিজের অস্তিত্বের সোপান মুসলিম সভ্যতা ও সংস্কৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধাশীল।
নিজের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি থেকে কখনো বিচ্যুত হননি। তাঁর ধর্মবোধ ও ধর্মানুরাগ এতই প্রবল ছিল যে একজন ইসলামি দার্শনিকের চেয়ে তিনি কোনো দিক থেকে কম ছিলেন না। সম্পূর্ণ আধুনিক চেতনার মানুষ হয়েও তাঁর ছিল প্রচণ্ড ধর্মপরায়ণতা। তিনি ছিলেন একজন খাঁটি বাঙালি এবং ধর্মপরায়ণ মুসলমান। এ ক্ষেত্রে তাঁর স্পষ্ট ও স্মরণীয় উক্তি হচ্ছে, ‘আমরা মুসলমান বা হিন্দু যেমন সত্য, তার চেয়ে বেশি সত্য আমরা বাঙালি।’ ভাষা আন্দোলনের ব্যাপারে তাঁর আপসহীন ভূমিকা ছিল সর্বশীর্ষে। ভারত বিভক্তির সময়ে পাকিস্তান সৃষ্টির পরই দেশের রাষ্ট্রভাষা নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়।
পাকিস্তানি শাসকেরা উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা করার পক্ষে অবস্থান নিলে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার পক্ষে যে কজন জোরালো বক্তব্য উপস্থাপন করেন, তাঁদের মধ্যে ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ ছিলেন অন্যতম। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে এবং বিভিন্ন সভা-সমিতি ও অনুষ্ঠানে বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা করার পক্ষে সাহসী ভূমিকা রাখেন। তাঁর অবিস্মরণীয় ভূমিকার ফলে রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনের পথ প্রশস্ত হয়। তাঁর জীবনের অনেক স্মরণীয় ঘটনা আছে, যা অবিস্মরণীয় ইতিহাস হয়ে আছে। এর মধ্যে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা উর্দু না হয়ে বাংলা হতে হবে। মূলত তিনিই ছিলেন প্রধান উদ্যোক্তা। বাংলাকে পূর্ব পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা করার পক্ষে সভা-সমিতি ছাড়াও দেশ-বিদেশের পত্রিকায় তাঁর বেশ কিছু প্রবন্ধ-নিবন্ধ প্রকাশিত হয়। এমনকি পাকিস্তান সৃষ্টির ১১ দিন আগে কমরেড পত্রিকায় তিনি লেখেন, ‘দ্য ল্যাঙ্গুয়েজ প্রবলেম অব পাকিস্তান’। তৎকালীন পাকিস্তানের স্বাধীনতার আগে বাংলা ভাষার স্বাধিকার ও গুরুত্ব নিয়ে এসব যৌক্তিক লেখা তৎকালীন বাঙালি সমাজের মধ্যে ভাষার প্রশ্নে বিপুল উৎসাহ ও উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়।
ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ বিবিসির জরিপে শ্রেষ্ঠ বাঙালি নির্বাচিত হওয়ার পর বিবিসির এক সাক্ষাৎকারে তাঁর ছেলে ভাষাসৈনিক ড. মুহম্মদ তকীউল্লাহ জানান, তাঁর বাবাই প্রথম, যিনি করাচি থেকে ফিরে আসার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ‘প্রফেসর ইমেরিটাস’ নির্বাচিত হন। তাঁর নেতৃত্বে বাংলা একাডেমির ইসলামি বিশ্বকোষ, বাংলা আধুনিক পঞ্জিকা প্রণীত হয়।
বাংলা সাহিত্যাদর্শে ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহর অবদান অপরিসীম। বাংলা ভাষার উৎকর্ষ সাধনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।
উপমহাদেশের শ্রেষ্ঠ শিক্ষাবিদ ও বুদ্ধিজীবী ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ অত্যন্ত সাধারণভাবে চলাফেরা করতেন। অতি সাদাসিধে আড়ম্বরহীন জীবনযাপনকারী অপার ধর্মবোধের অধিকারী হয়েও তিনি ছিলেন একজন মুক্তমনের অগ্রসরমান আধুনিক ও পূর্ণাঙ্গ মানুষ। তাঁর বৈচিত্র্যময় জীবনের প্রতিটি অধ্যায় ছিল বিস্ময়কর। ছাত্রজীবনে বিএ পাসের সময় (১৯০৮-০৯) থেকে বগুড়া জিলা স্কুলে শিক্ষকতার মধ্য দিয়ে তাঁর কর্মজীবন শুরু হয়। মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান হিসেবে তাকে অর্থ উপার্জনে নামতে হয়। পড়াশোনার কোনো ব্যাঘাত না করেই তিনি বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতার চাকরি করেন।
কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি হয়ে মেধা ও মননের সদ্ব্যবহার করেন। সামগ্রিক জীবনাচারের সর্বোত্তম গুণাবলির অধিকারী ও অধ্যবসায় এমন দৃষ্টান্ত খুব কম পাওয়া যায়। কখনো কোনো হতাশা ও কষ্টবোধ ছিল না তাঁর জীবনে। সারা জীবন অল্পতেই তুষ্ট থাকতেন। তিনি ছিলেন সাত পুত্র ও দুই কন্যাসন্তানের জনক। পারিবারিক জীবনে কঠোর শৃঙ্খলাবোধের অধিকর্তা হিসেবে অত্যন্ত নির্মোহ থেকেও তিনি তাঁর সন্তান ও পরিবারকে যেমন প্রচণ্ড ভালোবাসতেন, তেমনি সবাইকে আদর্শ সন্তানরূপে তৈরি করে গেছেন। জীবনের প্রতিটি পরতে কঠোর পরিশ্রম ও কষ্ট করে একজন আদর্শবান পেশাজীবী শিক্ষক হিসেবে তিনি যে দৃষ্টান্ত রেখে গেছেন, তা পৃথিবীতে বিরল। শিক্ষকতা করে যা বেতন পেতেন (কোনো প্রকার উপরি কিংবা ধার-কর্জ ছাড়া) সেই উপার্জন দিয়েই সারা মাস চালিয়েও তিনি ছিলেন সবচেয়ে ধৈর্যশীল সুখী মানুষ। উপমহাদেশ তথা বিশ্বের খ্যাতিমান একজন শিক্ষাবিদ, বহুভাষাবিদ ও পণ্ডিত হিসেবে ব্যক্তিগতভাবে তাঁর মধ্যে কোনো আভিজাত্যের অহংকার ছিল না। তিনি অত্যন্ত সাদাসিধে আড়ম্বরহীন জীবনযাপন করতেন।
গবেষকেরা মনে করেন, প্রাচ্যের অন্যতম সেরা ভাষাবিজ্ঞানী, শ্রেষ্ঠতম শিক্ষক ও বুদ্ধিজীবী ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ তাঁর ৭৪ বছরের জীবনে তাঁর কাজের মাধ্যমে বাঙালি জাতিকে বাংলা ভাষা এবং ভাষা রচনাকে ভালোবাসতে শিখিয়ে গেছেন। তাঁর সমগ্র জীবনবোধ অবিনশ্বর ও অনুসরণীয়। জীবনের প্রতিটি স্তরে মানুষের কল্যাণে তাঁর নীতিবোধ ও শিক্ষা চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।
বিশ্বের এই খ্যাতিমান শিক্ষাবিদ, বহুভাষাবিদ, দার্শনিক ও জ্ঞানতাপস মহামানব ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ ১৯৬৯ সালের ১৩ জুলাই মারা যান। তিনি চিরস্মরণীয় ও চির অনির্বাণ।
লেখক : কবি ও প্রাবন্ধিক।