কখন এবং কীভাবে পরাজয় স্বীকার করে ক্ষমতা ছাড়বেন এই নিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। টুইটারে টুইট করে তিনি কখন কি লিখছেন তা কারোই বোধগম্য নয়। সোমবার রাতে দেওয়া এক টুইট বার্তায় তিনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতির ইতিহাসে সবচেয়ে বড় দুর্নীতির নির্বাচনে তিনি কখনো পরাজয় মেনে নেবেন না। ভুয়া ব্যালটের কাছে তিনি কখনো পরাজয় মেনে নেবেন না।
এর আগে নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট হিসেবে জো বাইডেনকে ক্ষমতা গ্রহণের প্রস্তুতি শুরু করার চিঠি দিয়েছে জেনারেল সার্ভিস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (জিএসএ)।
এ চিঠি দেওয়ার কিছুক্ষণ পরেই ডোনাল্ড ট্রাম্প জিএসএ প্রধান এমিলি মারফিকে ধন্যবাদ জানিয়ে টুইট করেন। টুইট বার্তায় পরাজয় মেনে না নেওয়ার কথা বলা হলেও ধরে নেওয়া হচ্ছিল, ট্রাম্প নমনীয় হয়েছেন। মুখ রক্ষার জন্য লড়াই চালিয়ে যাওয়ার কথা বলে পরোক্ষভাবে নির্বাচনে পরাজয় মেনে নেওয়ার কাছাকাছি চলে এসেছেন।
সর্বশেষ মঙ্গলবার সকালে আরেক টুইট বার্তায় ট্রাম্প বলেন, মনে রাখবেন, জিএসএ দুর্দান্ত এবং এমিলি মারফি দারুণ কাজ করেছে। তবে, যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট কে হবেন, সেটি জিএসএ ঠিক করে দেয় না।
পেনসিলভানিয়া, মিশিগান ও জর্জিয়ার রাজ্যের ইলেকটোরাল ভোট সার্টিফিকেশনের পর অঙ্কের হিসাবে ট্রাম্পের কাছে নির্বাচনে জয় দাবি করার মতো অঙ্ক মেলানোর সুযোগ অবশিষ্ট নেই। পেনসিলভানিয়া নিয়ে রাজ্যের সুপ্রিম কোর্টে হেরে যাওয়ার পর সার্কিট কোর্টে গেছেন ট্রাম্প। সেখান থেকে সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন তার আইনজীবী।
ভোটে অনিয়মের মাধ্যমে ভোটারদের সাংবিধানিক অধিকার লঙ্ঘনের প্রতিকার চাওয়া হচ্ছে সুপ্রিম কোর্টের আবেদনে। রাজ্যের ভোট বাতিল করে রাজ্য আইনসভার সদস্যদের ইলেকটোরাল ভোট নিয়ে সিদ্ধান্ত দেওয়ার নির্দেশ চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করা হয়েছে। রাজনৈতিক ও আইন বিশ্লেষকেরা এ নিয়ে ট্রাম্পের সফল হওয়ার কোনো কারণ খুঁজে পাচ্ছেন না।
সোমবার মধ্যরাতের দিকে ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বিতীয় দফা টুইট বার্তার আগেই ডিপার্টমেন্ট অফ ডিফেন্সের পক্ষ থেকে বিবৃতি দিয়ে বাইডেন-হ্যারিস প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপিত হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। ডিপার্টমেন্ট অফ ডিফেন্সের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বিভাগটির পক্ষ থেকে দ্রুততার সঙ্গে বিধি অনুযায়ী সব কাজ শুরু করা হবে। প্রথা ও বিধি অনুযায়ী প্রেসিডেন্ট–ইলেক্ট জো বাইডেন এখন থেকে প্রতিদিনের রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা তথ্য পাবেন ডিপার্টমেন্ট অফ ডিফেন্সের কাছ থেকে।
শেষ মুহূর্তে এসেও প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঐতিহ্য অনুযায়ী বিজয়ী প্রার্থী বাইডেনকে এখনো অভিনন্দন জানাননি। তিনি টুইট বার্তায় বলেছেন, জিএসএ প্রধান এমিলি মারফিকে হয়রানি করা হচ্ছে, হুমকি দেওয়া হচ্ছে। তিনি এমনটি দেখতে চান না। এ কারণে দেশের স্বার্থেই তিনি বাইডেন শিবিরকে সহযোগিতা করার নির্দেশ দিয়েছেন।