ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি: ঠাকুরগাঁও জেলার পীরগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগ থেকে দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ইকরামুল হক।
তিনি বর্তমান পীরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক এমপি ইমদাদুল হকের ছোট ভাই। ইমদাদুল হক একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঠাকুরগাঁও-৩ আসনে আওয়ামী লীগ থেকে নৌকা প্রতীকে দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে ‘মটর গাড়ি’ প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রাথী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিয়ে ভোটে হেরে যান।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই আসনে বিজয়ী হন বিএনপির মনোনীত প্রার্থী জাহিদুর রহমান।
এবার পীরগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে ইমদাদুল হকেরই পথে হাঁটছেন তারই ছোট ভাই ইকরামুল হক। আওয়ামী লীগ থেকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে বর্তমান মেয়র কশিরুল আলমকে। যদিও কশিরুল আলমকে মনোনয়ন পেতে অনেকটা বেগ পেতে হয়েছে। কারণ পীরগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বাছাই করতে তিন জনের তালিকা জেলা কমিটিতে পাঠানো হয়।ৎ
পীরগঞ্জ পৌর কমিটির বর্ধিত সভায় কমিটির সদস্যদের মতামতের ভিত্তিতে সে তালিকা তৈরি করা হয়। ওই তালিকায় ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ইকরামুল হক, ঠাকুরগাঁও জেলা পরিষদের সদস্য সেতারা হক ও পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল খালেক।
কিন্তু সে তালিকায় আওয়ামী লীগ নেতা বর্তমান মেয়র কশিরুল আলমের নাম দেওয়া হয়নি। পরে কশিরুল আলম জেলা আওয়ামী লীগ ও কেন্দ্রীয় মনোনয়ন বোর্ডে লিখিত অভিযোগ করেন। দল অভিযোগটি আমলে নিয়ে কশিরুল আলমের নাম যুক্ত করে এবং পরে দল থেকে তাকেই মনোনয়ন দেন।
এদিকে গত ১ ডিসেম্বর মনোনয়ন দাখিলের শেষ দিনে মেয়র পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ইকরামুল হক মনোনয়ন দাখিল করেন। যদিও সঙ্গে তার বড় ভাই ও সাবেক এমপি ইমদাদুল হক ছিলেন না। আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর মনোনয়ন দাখিলের সময় সঙ্গে ছিলেন ইমদাদুল হক। আওয়ামী লীগ প্রার্থীর পক্ষে ভোটের মাঠে ইমদাদুল হক থাকলেও ভেতরে ভেতরে ছোট ভাইয়ের জন্য কাজ করছেন কি-না এ নিয়েও নানা প্রশ্ন তৈরি হচ্ছে জনমনে। অনেকে বলছেন,‘ভাই বড় নাকি দল বড়! বুঝা যাবে ২৮ তারিখের ভোটে।’
এছাড়া আওয়ামী লীগের সংখ্যাগরিষ্ঠ নেতাকর্মীকে কশিরুল আলমের পক্ষে ভোটের মাঠে সরগরম থাকতে দেখা গেলেও কিছু সংখ্যক রয়েছে ইকরামুল হকের পক্ষে। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ভোট দুই ভাগে ভাগ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আর এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে ভোটের মাঠ চাঙ্গা করতে ব্যস্ত বিএনপির প্রার্থী রাজিউর রহমান রাজা।
এছাড়াও ভোটের মাঠে আছেন জাতীয় পার্টির প্রার্থী তৈয়ব আলী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের হাফিজুর রহমান। মনোনয়ন বাতিলের পরও মাঠে সক্রিয় স্বতন্ত্র প্রার্থী বিএনপি নেতা জয়নাল আবেদীন। ১০ ডিসেম্বর মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিনেই বোঝা যাবে চূড়ান্তভাবে ভোটের মাঠে কারা থাকছেন। আগামী ২৮ ডিসেম্বর পীরগঞ্জ পৌরসভার ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।