সৌদি কিশোর মুর্তজা কুরেরিসকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হচ্ছে না এবং তাকে ২০২২ সালে মুক্তি দেয়া হবে বলে শনিবার দেশটির একজন কর্মকর্তা জানান। ২০১৪ সালে মাত্র ১৩ বছর বয়সে আটক হওয়া মুর্তজা মৃত্যুদণ্ডের অপেক্ষায় আছে, এমন খবরের ওপর মন্তব্য করতে গিয়ে ওই সৌদি কর্মকর্তা তথ্যটি দেন। ইউরো নিউজ, রয়টার্স
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তা জানান, নাশকতার অভিযোগে আটক মুর্তজাকে ২০১৪ সালে ১২ বছরের সাজা দেয়া হয়। পরে তার বয়স বিবেচনা করে ৪ বছরের সাজা কমিয়ে দেয়া হয় এবং বাকি সাজার সময়সীমা শেষ হবে ২০২২ সালে।
সম্প্রতি অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালসহ কয়েকটি অধিকার সংগঠন জানায়, সৌদির ওই কিশোরের বিরুদ্ধে ভিন্নভিন্ন অভিযোগ এনে দেশটির পুলিশের প্রসিকিউটর তার মৃত্যুদণ্ড চায়। এ ব্যাপারে আপিলও করা হয়। প্রসঙ্গত, অনেকেই তার আটক হওয়ার সময় বয়স ১০ বছর ছিলো বলে দাবি করে।
ইতোমধ্যেই সৌদি আরব দেশটির ভিন্নমতাবলম্বী সাংবাদিক জামাল আহমেদ খাসোগজির হত্যাকাণ্ড নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে আছে। তার ওপর কিশোরের মৃত্যুদণ্ড। কর্তৃপক্ষের এমন পরিকল্পনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখায় অধিকার সংগঠনসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়। অস্ট্রিয়া গত বুধবার জানায়, মুর্তজার মৃত্যুদণ্ড না আটকালে ভিয়েনায় সৌদি সরকারের একটি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়া হবে।
মুর্তজার এলাকা শিয়া মুসলিম অধ্যুষিত সৌদি আরবের পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশের সঙ্গে সুন্নি মতাবলম্বী রিয়াদ কর্তৃপক্ষ বৈষম্যমূলক আচরণ করছে এবং সমানাধিকার থেকে বঞ্চিত করছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এতে নিজেদের অধিকার নিশ্চিতের দাবিতে ২০০১ সাল থেকে আন্দোলনে সোচ্চার হয় শিয়ারা। এরপর থেকে অনেক শিয়াকে বিচারের নামে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। গত এপ্রিলেও সন্ত্রাসবাদের অভিযোগে ৩৭জন শিয়াকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়। তবে বিচারের নামে হত্যা ও শিয়াদের সঙ্গে বৈষম্যমূলক আচরণ করার অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে সৌদি।
উল্লেখ্য, মুর্তজা শিয়াদের সমর্থনে নাশকতায় অংশ নেয় বলে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়। ওই কর্মকর্তা জানান, মুর্তজা বিক্ষোভে অংশ নিয়ে পুলিশের ওপর ককটেল নিক্ষেপ ও আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে হামলা চালিয়েছিলো বলে অভিযোগ আনা হয়। এমনকি, ২০১৪ সালের জানুয়ারিতে সৌদি আরবের কাতিফ অঞ্চলে জার্মান কূটনৈতিকের একটি গাড়িতে হামলায় অংশ নেয়। ওই হামলায় কেউ আহত না হলেও গাড়িটিতে আগুন ধরে যায় বলে অভিযোগ করা হয়।