নিজের নিজের ছোটবেলার কথা ভাবলে দেখবেন আমাদের শৈশবটা অনেক আনন্দের ছিলো । আমার ব্যাপারে বলতে পারি বিশাল জয়েন্ট ফ্যামিলিতে কতো আব্দারে আল্হাদে বড় হয়েছি তা আমার সন্তানদের সাথে যখন শেয়ার করি , ওরা বলে ‘ ইস ! তোমাদের লাইফটা কতো মজার ছিলো । ‘ এটা ঠিক , তখন হাতে হাতে এতো ডিভাইস ছিলোনা । খেলা ধুলা ছুটো ছুটি করে বিকেলগুলো কাটতো আমাদের ! এখনকার শিশুদের মতো কোচিং বা হোম টিউটর এর ঝামেলা ছোটবেলায় ছিলোনা বললেই চলে । আর দাদী ছিলো আমাদের বেস্ট ফ্রেন্ড ! আব্বু আম্মুর বকুনি আর রাঙা চোখের শাসনকে ভয় পেতাম ঠিকই কিন্তু সম্পর্কটা ছিলো বন্ধুর মতো। সব কথা ওঁদের সাথে শেয়ার করতাম । আর তাঁরাও ছোট ছোট ভুল গুলো অনেক সময় ধরিয়ে দিয়ে সঠিক পথটি বাতলে দিতেন যা শুধু একজন ভালো বন্ধুই করতে পারে। শাষনযে করতেননা তাতো নয় , তবে তা কখনোই মাত্রারিক্ত মনে হয়নি কোনোদিন । তাই সেই ছোটবেলা থেকে আজ পর্যন্ত যতো কথা আব্বু আম্মুর সাথেই শেয়ার করে আসছি । আমার সন্তানদেরও ওই একই প্রক্রিয়ায় বড় করে তুলছি , এতে একটাই সুবিধে ওরা কখনও কোনো কিছু হাইড করেনা আমার কাছ থেকে । তাই সবাইকে আহ্বান জানাই সন্তানের সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য একমাত্র উপায় ওদের বন্ধু হয়ে ওঠা । আমার সন্তানদের সাথে আমি যেভাবে সময় কাটাই তার কিছু তুলে ধরছি যা চাইলে আপনারাও এপ্লাই করতে পারেন নিজেদের জীবনে ।
১. ওরা কি বই পড়ছে সেগুলো মাঝে মাঝে হাতে নিয়ে দেখবেন , ওই বইটি সম্পর্কে ওদের কাছেই জানতে চাইতে পারেন । ছোট শিশুদের বই পড়ে পড়ে গল্প শুনিয়ে ঘুম পাড়ান ।
২. ওদের সাথে বসে মুভি দেখুন , ভালো না লাগলেও সঙ্গ দিন ওদের । এরপর থেকে মুভি দেখার সময় ওরাই আপনাকে ডাকবে।
৩. ওদের বন্ধুদের বিভিন্ন উৎসব অনুষ্ঠানে বাসায় ডাকুন ! জেনে নিন ওরা কার সাথে মিশছে । বন্ধুদের ব্যাপারে জানতে চাইতে পারেন ! কে কেমন আছে , কার কি পছন্দ এসব আরকি । তাতে আপনার একটা ধারনা হবে ওদের ব্যাপারে।
৪. দিনের যে কোনো একটা সময় সেটা রাতে ঘুমাতে যাবার আগেও হতে পারে । সারাদিনের সব কিছু যখন বলবে ওরা তখনও মন দিয়ে ওদের কথা শুনুন।অভিভাবকদের সান্নিধ্যে নীতি শিক্ষার ভেতর বেড়ে উঠবে আপনার শিশু।অন্যায় বা অপরাধমূলক কাজ থেকে নিজেদের বিরত রাখার ক্ষেত্রে বাবা মায়ের এই বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কটি অবশ্যই কাজে দেবে।
তাই সকল বাবা মাকে বলছি বন্ধু হয়ে উঠুন শিশুদের।