মিলি সুলতানা
লাল বেনারশি পরা এই মেয়েটির নাম চৈতী বিশ্বাস। যদিও ফেসবুকে তার আইডির নাম চৈতী সরকার মায়া। চৈতীকে নিয়ে ঘটনা ভালোই প্যাঁচ খেয়েছে। বাংলাদেশ মাইনোরিটি ওয়াচ এবং সনাতন ধর্মের অনলাইন অ্যাক্টিভিস্টরা বলছেন, সিরাজগঞ্জ জেলার এনায়েতপুর থানার মাঝগ্রামের চৈতী বিশ্বাসকে তার নানুর বাড়ি থেকে গত ৮ ডিসেম্বর অপহরণ করে নিয়ে যায় মোহাম্মদ মোকদম আলি, মোঃ হযরত আলি এবং হালিমা বেগম। চৈতী বিশ্বাসের বাবা চিত্তরঞ্জন বিশ্বাস অভিযোগ করেন উক্ত তিন ব্যক্তির বিরুদ্ধে। তিনি বলেন, ওই তিন ব্যক্তি চৈতীকে মুসলিম ধর্ম গ্রহণ করতে বাধ্য করে। তার নাম দেওয়া হয় খাদিজা খাতুন।
চৈতী বিশ্বাস (১৭) সিরাজগঞ্জ থানা বেলকুচি মহিলা ডিগ্রি কলেজে একাদশ শ্রেণির ছাত্রী। কিন্তু সম্প্রতি চৈতী বিশ্বাসের একটি ভিডিও আপলোড হয়েছে ফেসবুকে। সেখানে দেখা গেছে মাথায় ঘোমটা পরা চৈতী বলেছে, সে ইসলাম ধর্মের প্রতি অনুরক্ত হয়ে সজ্ঞানে হিন্দুধর্ম ত্যাগ করে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছে। তার নাম আয়েশা খাতুন। সে এটাও বলেছে তার বাবা মা’ তাকে মানসিক নিপীড়ন করতেন। ওঝা তান্ত্রিক ধরে তারা চৈতীর খাবারে বিভিন্ন দ্রব্যাদি মিশিয়ে দিতেন।
চৈতীর বাবা চিত্তরঞ্জন বিশ্বাস বলেছেন থানার পুলিশ তাদের মামলা নিতে চায়নি। যদিও নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৭/৩০ ধারামতে আসামীদের বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়েছে। মামলার নম্বর ৩/৭৩, ১৭/১২/২০২০ তারিখে দায়ের হয় মামলাটি। চৈতীর বাবার কথা যদি সত্য হয়, তাহলে চৈতীর অপহরণকারীরা যেন অবশ্যই কঠিন শাস্তি পায়। আর যদি চৈতীর কথা সত্যি হয় তাহলে বলব, বাংলাদেশ মাইনোরিটি ওয়াচ তাদের বিভ্রান্তিকর মনোভাব থেকে বেরিয়ে আসুক। আমার ব্যক্তিগত মতামত হচ্ছে, কাউকে জোর করে তার ধর্ম ত্যাগ করতে বাধ্য করা খুবই জঘন্য অপরাধ। স্বেচ্ছায় যদি কেউ হিন্দু মুসলমান খ্রিস্টান বৌদ্ধ হয়, তাকে বাধা দেয়া উচিত নয়। প্রত্যেকের ধর্মীয় স্বাধীনতা নিশ্চিত করা সরকারের দায়িত্ব।