দেশকে এগিয়ে নিতে ছাত্রলীগের প্রত্যেক নেতাকর্মীকে অর্থ সম্পদ এবং ভোগ বিলাসে চোখ না দিয়ে আদর্শবান হওয়ার উপদেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
সোমবার (৪ জানুয়ারি) বিকেলে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ৭৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে রাজধানীর খামারবাড়ি কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে ছাত্রলীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় এই উপদেশ দেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি কেআইবি মিলনায়তনে যুক্ত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, মনে রাখবে, যে আদর্শ নিয়ে গড়ে তুলতে পারবে নিজেকে সেই কিন্তু সফল হবে। আর যদি অর্থ সম্পদের দিকে নজর চলে যায় কখনো সফল হতে পারবে না, ভোগবিলাস করতে পারবে। এটা হল বাস্তবতা।
‘কাজেই জাতির পিতার আদর্শ নিয়ে নিজেদেরকে গড়ে তোলো দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে। ছাত্রলীগ বাংলাদেশের প্রতিটি অর্জনে অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছে, এই ঐতিহ্যের কথা মনে রাখতে হবে। সেভাবে তোমরা নিজেদের গড়ে তুলবে।’
এ সময় করোনাসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ-প্রয়োজনে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য ছাত্রলীগের কর্মকাণ্ডের প্রশংসা করেন।
‘করোনাভাইরাসের সময় আক্রান্ত রোগী এবং যারা মৃত্যুবরণ করেছে তাদের পাশে দাঁড়ানো, তাদের সাহায্য করা। ঘরে ঘরে খাদ্য পৌঁছে দেওয়া, যখন ঝড় (আম্পান) আসল সেই ঝড়ের সময় মানুষের পাশে দাঁড়ানো, এই যে মানুষের সেবার জন্য যে কাজগুলো করে যাচ্ছো সেটাই হচ্ছে বড় কাজ। কাজেই সেভাবে নিজেকে গড়ে তুলবে, আদর্শবান একজন নেতা হিসেবে গড়ে উঠতে হবে। যেন আগামী দিনে দেশটাকে তোমরা এগিয়ে নিতে যেতে পার।’
ছাত্রলীগের কর্মী থাকাকালীন নিজে পদ পদবীর চেয়ে আন্দোলন-সংগ্রামে অংশগ্রহণকেকে মুখ্য হিসেবে দেখেছেন বলেও জানান শেখ হাসিনা।
‘সেই ৬২ সালের শিক্ষা আন্দোলন থেকেই শুরু করেছি মিছিলে যাওয়া। তখন থেকেই মিছিলে গেছি। তারপরে কলেজ আর বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রাম মিছিলে সবসময় ছিলাম। কখনো আমরা কিছু হওয়ার কথা চিন্তা করিনি।’
ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, নিজেদের ঐতিহ্য মাথায় রেখে জাতির পিতার আদর্শ বুকে ধারণ করে তোমরা নিজেদেরকে গড়ে তুলবে দেশেপ্রেমে। বাংলাদেশ ২০২০ পার হয়ে ২০২১’এ এসেছি। এটা হচ্ছে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর বছর। কাজেই মুজিববর্ষ এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করব।
‘যাদের গৃহ নাই, তারেদ ঘর করে দিচ্ছি। তোমাদের কাছে অনুরোধ থাকবে, তোমরা নিজ নিজ এলাকায় খোঁজ করো, কোন মানুষটা গৃহহীন আছে। সেই মানুষটা পেলে অবশ্যই আমাকে খবর দেবে এবং স্থানীয়ভাবে খবর দেবে। তাকে আমরা বিনা পয়সায় ঘর করে দেব। প্রত্যেকটা মানুষকে ঘর করে দেব। প্রত্যেকে ঘরে আমরা বিদ্যুৎ দিয়ে আলো প্রজ্বলিত করব।”
ইতিমধ্যে ৯৯ ভাগ মানুষের ঘরে বিদ্যুৎ পাচ্ছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে সবাই পাবে।’ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সংগঠনের সারা দেশের সাবেক ও বর্তমান নেতাকর্মীদের প্রতি শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান সংগঠনটির সাংগঠনিক অভিভাবক বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা।
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে গণভবন প্রান্তে এবং কেআইবি মিলনায়তনে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কেক কাটা হয়। ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন ও অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক। এছাড়া মঞ্চে ১৯৮১ সাল থেকে বিগত সময়ে সাবেক হওয়া কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।
ছাত্রলীগ সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়ের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য।
তথ্য: বাসস