উমামা ফাতেমা।সদস্য বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা
মাস্টারমাইন্ড স্কুলের মেয়েটি বাঁচেনি, তবে আসুন আর মরার রাস্তা প্রস্তুত না করি।হতে পারে পর্ণগ্রাফির মেয়েরা anul sex এর সময় কান্না করতে করতে হাসে দেখে হয়তো মনে হতে পারে ‘সব সম্মতিতে হইছে’। মেয়েদের বায়োলজিকাল গঠন কখনো এই পথে যন্ত্রণাদায়ক শারীরিক সম্পর্ক করার জন্য প্রমোট করে না। তার উপরে মেয়েটার প্রথমবার ছিল, আর তার শরীর তখনো ডেভেলপিং ফেইজে। ২০ বছর বয়স পর্যন্ত ছেলে মেয়েদের শরীর পূর্ণাঙ্গ হয় না, শারীরিক গঠন পুরোপুরি মজবুত হতে পারে না।
এই ঘটনায় যেটা হতে পারে, ছেলের যৌন উত্তেজনা আকাশ চুম্বি হওয়ার পর তার মনে হইছে ‘পর্ণে তো দেখছি সব পথেই সেক্স করে, মেয়ে কান্না করলেই তো পুরুষত্ব প্রকাশ পায়’। তাই মেয়েটার সাথে পায়ুপথে সেক্স করতে চায়। মানুষের পায়ুপথে যোনীর মতো elastic muscle থাকে না, ফলে এটি সহজে stretch হয় না। পায়ুপথের পেছনে থাকে আমাদের শিরদাঁড়ার এক্সটেনশন। পাশাপাশি পায়ুপথ যোনীর মতো লুব্রিকেটেড থাকে না। তাই, elasticity ও lubricant না থাকায় এই রাস্তা দিয়ে জোর করে সঙ্গম করলে ভয়াবহ যন্ত্রণা, শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়। google করলেই তা পেয়ে যাবেন। এরকম ভয়াবহ যন্ত্রণাদায়ক প্রক্রিয়া প্রথম শারীরিক সম্পর্কে কোনো মেয়ে সহ্য করতে পারবে না। মাস্টার মাইন্ডের মেয়েটি যোনী ও পায়ুপথে রক্তক্ষরণ ও হেমোরেজিক শকের কারণে মারা গেছে। রক্তক্ষরণের কারণ হলো অতিরিক্ত প্রেশারের কারণে আশপাশের মাসল ছিঁড়ে যাওয়া, সেটাও দ্রুত হাসপাতালে নিলে ট্রিটমেন্টের মাধ্যমে ঠিক করা সম্ভব। কিন্তু রক্ত পড়ার পরও ছেলেটি ক্রমাগত সেক্স করে যাওয়ায় মেয়েটির যোনীপথ ও পায়ুপথের মাসল ছিন্নভিন্ন হয়ে ক্রমাগত রক্ত পড়তে থাকে। পায়ুপথের মাসল শক্ত(stiff) হওয়ায় জবরদস্তির প্রভাব এই অংশে বেশি পড়ে। ওই পর্যায়ে তার শরীরে বাধা দেয়ার মতো শক্তি অবশিষ্ট থাকার কথা না(ভয় আর রক্তক্ষরণ)। হেমোরেজিক শক হলো শরীর থেকে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে শরীরের অর্গানগুলো নিষ্ক্রিয় হয়ে যাওয়া। এটার কারণে মেয়েটা মারা যায়।
আপনার কি মনে হয় একটা মানুষ যখন দেখতেছে তার ভয়াবহ যন্ত্রণা হচ্ছে, রক্ত পড়তে পারে, সে তখন বাধা দিবে না, অন্তত থামার জন্য অনুরোধ করবে না?? আর রক্তক্ষরণ শুরু হলে, বিশেষ করে, আমাদের শরীর সবথেকে স্পর্শ কাতর অংশে যন্ত্রণা শুরু হলে শারীরিক ভাবে বড় রকমের বাধা তৈরি করা সম্ভব হয় না। মেয়েদের পিরিয়ড চলাকালীন যখন তলপেটে ব্যাথা করে তখন পেলভিস এরিয়ার ব্যাথায় হাত পা অবশ হয়ে যায়। অনেকেই নাপা খেয়ে সারাদিন বিছানায় পড়ে থাকে। ব্যথায় নড়তে পারে না।
এটা ধর্ষণ নাকি স্রেফ সম্মতির ভিত্তিতে শারীরিক সম্পর্ক সেটা একটু কমন সেন্স খাটালেই বোঝা যায়। মানুষের শরীর গঠন, রোগ বিরোগ সম্পর্কে জানাকে সেক্স এডুকেশন বলে। মেয়ে হিসেবে আমি নিজের শরীরকে চিনি। এটুকু কমনসেন্স ব্যবহার করে বোঝার এবং বোঝানোর চেষ্টা করেছি। খোলামেলা ভাবেই বলেছি, কারণ রাখঢাক রেখে বললে সেই একই লুপে আটকা পড়ে যাই আমরা।
ছবি:ডেইলি স্টার