সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বলেছেন, ‘সমাজ, স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, জাতীয় পতাকা কিংবা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে কুৎসা বা অপবাদ রটানো মুক্তচিন্তার বহিঃপ্রকাশ হতে পারে না। এসব বিষয়ে কোনো আপস করা যাবে না।’
শনিবার (২১ জানুয়ারি) দুপুরে অমর একুশে গ্রন্থমেলা-২০২৩ আয়োজনের সার্বিক প্রস্তুতি সরেজমিনে দেখার পর গণমাধ্যম প্রতিনিধিদের তিনি এসব কথা বলেন।
আদর্শ প্রকাশনীকে মেলায় স্টল বরাদ্দ না দেওয়ার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী বলেন, মুক্তচিন্তা বলতে যদি জাতির পিতাকে কটাক্ষ করে কোনো বই লেখা হয়, তাহলে সেই বিষয়ে কোনো আপস করা হবে না। গত বছর আদর্শের বইতে আপত্তিকর কিছু বিষয় ছিল। সেসব বিষয়ে তাদের জানানো হয়েছে। তারা সংশোধন করেননি। সবাইকে বইমেলার নিয়ম মেনে আসতে হবে। বইমেলার নিয়ম-নীতির বাইরে আমরা যেতে পারব না। তারা যদি নিয়ম-নীতির মধ্যে আসেন, তাহলে তাদের ব্যাপারে যে সিদ্ধান্ত হবে, সেটি তাদের জানানো হবে।
বইমেলার নিয়ম-নীতি সংস্কারের জন্য আদর্শ প্রকাশনী যে দাবি তুলেছে, সে বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, সংস্কার সময়ের ব্যাপার। তাৎক্ষণিক চাইলে তো আর এটা করা সম্ভব হবে না।
তিনি বলেন, বইমেলার জন্য একটা নীতিমালা আছে। যেসব প্রতিষ্ঠান বইমেলায় অংশগ্রহণ করবে, তাদের সেই নীতিমালা মানতে হবে। যদি কেউ নীতিমালার বাইরে যায়, তাদের জন্য সাত সদস্য বিশিষ্ট একটা টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে। মেলা প্রাঙ্গণে টাস্কফোর্সের জন্য একটা অফিসও করে দেওয়া হয়েছে।
টাস্কফোর্সের কারণে মুক্তচিন্তার কোনো ব্যাঘাত ঘটবে না, জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, যার যার মত সে প্রকাশ করবে। কিন্তু, একটা জিনিসি মাথায় রাখতে হবে, কারও বিরুদ্ধে হিংসা-বিদ্বেষ বা অগ্রহণযোগ্য কোনো কিছুই আমরা চাই না। এটি মুক্ত জায়গা। আমাদের প্রাণের মেলা। এখানে আমরা চাই না, কেউ কাউকে নিয়ে কোনো ধরনের কটাক্ষ করুক।
আসন্ন বইমেলায় অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে কে এম খালিদ বলেন, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ৪৭২টি প্রতিষ্ঠান থাকবে। স্টল থাকবে ৭১০টি। বাংলা একাডেমির ভেতরে প্রতিষ্ঠান থাকবে ১০৩টি আর স্টল ১৪৭টি। সব মিলিয়ে ৫৭৫টি প্রতিষ্ঠান এবং সর্বমোট স্টল ৮৫৭টি। এবারের মেলায় প্যাভিলিয়ন থাকছে ৩৪টি। এছাড়া, ফুডকোর্ট, নামাজের জায়গা, ওয়াশরুম সব আগের মতোই থাকবে।
বইমেলার প্রস্তুতি নিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, মেলার একপ্রান্তে দাঁড়ালে যেন শেষ প্রান্ত পর্যন্ত দেখা যায় সেভাবেই মেলার পুনর্বিন্যাস করা হয়েছে। আমাদের সকল প্রস্তুতি রয়েছে, তা নিয়ে আমরা সন্তুষ্ট। এখন পর্যন্ত সবকিছু আমাদের পরিকল্পনামাফিকই এগিয়ে যাচ্ছে। যথাসময়ে যেন মেলা শুরু করা যায়, সেজন্য আমরা এটা সার্বক্ষণিক মনিটরে রাখব। এ ব্যাপারে আমরা প্রকাশক, লেখক, পাঠক, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা চাই।
মেলার উদ্ধোধনী অনুষ্ঠান নিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী সশরীরে এসে মেলা উদ্বোধন করবেন। এখনো পর্যন্ত সে সিদ্ধান্তই আছে। ১ ফেব্রুয়ারি বিকেল ৩টায় তিনি (প্রধানমন্ত্রী) আসবেন। উদ্বোধন এবং প্রধানমন্ত্রীর পরিদর্শন শেষে ১ তারিখেই বইমেলা সবার জন্য উম্মুক্ত করে দেওয়া হবে।