পার্লামেন্ট থেকে চায়ের দোকান—বিশ্বের সব জায়গায় আলোচনার বিষয় ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণ। লাখ লাখ ইউক্রেনিয়ান দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন, জীবন রক্ষায় যা এখনো চলমান। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেন আক্রমণ করে রাশিয়া। এদিন দেশ থেকে পালিয়ে যান বিতর্কিত প্রাক্তন ‘মিস ইউক্রেন ২০১৮’ বিজয়ী ভেরোনিকা দিদুসেনকো। এ যাত্রায় সঙ্গী ছিল তার ৭ বছরের পুত্র।
ভেরোনিকা বর্তমানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসে অবস্থান করছেন। মঙ্গলবার (৮ মার্চ) সেখানে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন এই প্রাক্তন সুন্দরী। সেখানে দেশ ছেড়ে পালানোর গল্প শুনিয়েছেন তিনি। তার ভাষায়—‘অভিযান শুরু হওয়ার পর রাজধানী কিয়েভ সাইরেনের শব্দে জেগে উঠেছিল। আমাদের মতো হাজার হাজার পরিবার শহর ছেড়ে পালানোর চেষ্টা করছিল।’
পশ্চিম ইউক্রেনের বর্ডার দিয়ে দেশ ছাড়েন ভেরোনিকা। বর্ডার পর্যন্ত ধীর গতিতে গাড়ি চালিয়ে যান তিনি, হাজার হাজার গাড়ি রাস্তায় নামার কারণে প্রচন্ড জ্যাম লেগে গিয়েছিল। এ সময় ভয়ংকর অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে বর্ডারে যেতে হয় তাকে। তা জানিয়ে ভেরোনিকা বলেন—‘সরাসরি আমার মাথার ওপর দিয়ে ডজন ডজন হেলিকপ্টার রাশিয়ার সৈন্য নিয়ে বোমা বর্ষণ করেছে। সরাসরি বিমান যুদ্ধ দেখেছি।’
মা-ছেলে যখন বর্ডারের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলেন, তখন এমন কোনো জায়গা নেই যেখানে সাইরেন বাজছিল না, বোমাসহ রকেট বিস্ফোরিত হয়নি বলে জানান ভেরোনিকা। তার ভাষায়—‘এটা ভয়ংকর অভিজ্ঞতা। অনেক মা তার শিশুসন্তান নিয়ে বর্ডারে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন। ওই সময়ে এর চেয়ে আর কি সহিংসতা হতে পারে!’
ভেরোনিকার মা ও দাদা-দাদি এখনো ইউক্রেনের কিয়েভে অবস্থান করছেন। উদ্বিগ্নতা প্রকাশ করে তিনি বলেন—‘মানুষ আশ্রয় কেন্দ্রে না খেয়ে মারা যাচ্ছে, সেখানে পানি নেই, আলো নেই, রুম গরমের ব্যবস্থা নেই। এটি একটি ট্র্যাজেডি, এটি সন্ত্রাসবাদ।’
২০১৮ সালে মিস ইউক্রেন প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হন ভেরোনিকা। কিন্তু আয়োজক কর্তৃপক্ষ পরে জানতে পারেন তিনি বিবাহিত, তার বিয়েবিচ্ছেদ হয়েছে এবং তার একটি পুত্রসন্তান আছে। পরে তার বিজয়ের মুকুট কেড়ে নেওয়া হয়।
সূত্র: নিউ ইর্য়ক পোস্ট