সুগন্ধ তালুকদার
আজি শুভ লগনেতে
বুলবুলির পরিণয়,
দেখতে যেন পরীর মতো –
তবু যে পরী নয়।
মেতে উঠল জোনাকি দল
ব্যাঙের পায়ে ঘুঙুর,
ঝি ঝি তানে আপন মনে
ফড়িং টানে নোঙর।
কাকে ডাকে কাহ্ কাহ্
কোকিল ডাকে কুহু,
হুলো বিড়াল কামড় দিল
বানর লাফায় উঁহু!
ময়ুর নাচে পেখম তুলে
সাপে দেখায় খেলা,
কাঠবিড়ালি নেচে বেড়ায়
সারা দুপুর বেলা।
মৌমাছি আজ নাচি নাচি
আসল নিয়ে মধু,
বুলবুলিকে দিতে বিয়ে
সাজালো তাই বঁধু।
বিয়ে তো নয়, চলেছে ধুম-
এলাহি এক কান্ড!
হাতি নাচে ঘোড়া নাচে
গন্ডার ভাঙে ভান্ড।
বক এর সাথে ফিঙ্গে আসলো
ভাল্লুক মশাই পিছে,
জেব্রা, জিরাফ, উট আসবে না
মহিষ বলল মিছে।
শিয়াল, কুকুর আসিতেই হায়!
মুরগি গেল দূরে,
সিংহ মামা বেজায় খুশি
হরিণ পালায় দৌড়ে।
কুমির আজি খেয়া হয়ে
করছে তো পারাপার,
বনের যত পশু-পাখি
পাড়ি দেয় পারাবার।
চড়াই পাখি সাজায় বাসা
খেজুর পাতা দিয়ে,
হুতোম পেঁচা চেয়ে দেখে
কাছাকাছি গিয়ে।
শুকর এল রাস্তা ঘাটে
করিতে পরিস্কার,
শ্যামা বলে, “ময়নারে তুই
গয়না টি পড়িস কার?”।
গরু, ছাগল নেই তো বসা
আসছে ধেয়ে ধেয়ে,
বিয়ে বাড়ি পশু পাখি
বাড়ি গেল ছেয়ে।
টিয়ে আসে ঠোঁট রাঙিয়ে
বরের পক্ষ ধরে,
কচ্ছপ গেল বর আনিতে
আপ্যায়িত করে।
খানিক পরে লগ্ন শুরু
চলছে তাড়াহুড়া,
দোয়েল, কোয়েল দিচ্ছে বসন
যত জোয়ান বুড়া।
বর এসেছে উঠোন মাঝে
ডালিম গাছের তলে,
পাখ-পাখালি ভিড় করেছে
দেখে পলে পলে।
কন্যা দানে বসালো বর
অনুমতি নিয়ে,
পিপীলিকা মুচকি হাসে
বুলবুলিতে বিয়ে।
বুলবুলিতে বেঁধেছে ডোর
চন্দ্র, সূর্য সেঁধে,
আশীর্বাদে প্রজাপতি
সপ্ত পাঁকে বেঁধে।