উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ ক্ষমতার অধিকারী কিম জং উন। বিভিন্ন সময় তার নানা কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে আলোচিত হয়েছেন। কঠোর, একগুঁয়ে, রহস্যময় শব্দগুলো তার নিত্যসঙ্গী।
ব্যক্তিগত জীবনে রি সোল জু নামের এক নারীকে বিয়ে করেছেন কিম জং উন। তাদের বিয়ে হয় ২০০৯ সালে। কিন্তু ২০১২ সালে প্রথম এই দম্পতিকে জনসম্মুখে দেখা যায়। আর তাদের বিয়ের বিষয়টি জানা যায় আরো পরে। এখনো রি সোল জুকে নিয়ে মানুষের অনেক কৌতূহল রয়েছে। চলুন জেনে নিই যেসব বিধি-নিষেধ মানতে বাধ্য হন কিম জং উনের স্ত্রী-
কিমকে বিয়ে করতে বাধ্য হয়েছিলেন রি সোল জু:
নিজের জীবনসঙ্গী নির্ধারণ করার সুযোগ অনেকে পেলেও সেটি পাননি রি সোল জু। অনেকটা জোর করেই তাকে বিয়ে করেন কিম জং উন। ২০০৮ সালে কিমের বাবা কিম জং ইলের স্ট্রোক হয়। তখন তিনি ছেলেকে নির্দেশ দেন রিকে বিয়ে করতে। আর এই নির্দেশ প্রত্যাখ্যান করার কোনো সুযোগ কারো ছিল না।
বিয়ের পর নাম পরিবর্তন:
বিয়ের পর অনেকে হয়তো স্বামীর পদবি নামের সঙ্গে যুক্ত করেন। কিন্তু রি সোল জুর ক্ষেত্রে বিষয়টি আরো জটিল ছিল। নিজের জন্মগত নাম পরিবর্তন করে নতুন নাম রাখা হয়। শুধু তাই নয়, তার অতীতের পরিচয় সম্পূর্ণ গোপন রাখা হয়েছে। তার আসল নাম ও বয়স এখনো সবার কাছে অজানা।
পরিবারের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ নেই:
উত্তর কোরিয়ার একটি সম্ভ্রান্ত ও ধনী পরিবারে বড় হয়েছেন রি সোল জু। তার মা ছিলেন হাসপাতালের গাইনোকোলোজি বিভাগের প্রধান। অন্যদিকে বাবা ছিলেন অধ্যক্ষ। সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এক আত্মীয়ের মাধ্যমে কিমের সঙ্গে তার পরিচয়। কিন্তু বিয়ের পর এখন পরিবারের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পান না রি সোল জু।
পোশাক ও চুলের স্টাইলে নিয়ন্ত্রণ:
প্রথম জনসম্মুখে আসার পর রি সোল জুর পশ্চিমা পোশাক সবার নজর কেড়েছিল। কিন্তু ধীরে ধীরে সেগুলো উধাও হতে শুরু করে। জিন্স পরা তার জন্য নিষিদ্ধ। এখন স্বামীর পছন্দ মতো পোশাক পরতে হয় তাকে। এমনকি প্রথম সন্তান জন্মের পর থেকে তার চুলের স্টাইলও একই রকম রয়েছে।
জনসম্মুখে আসা সংরক্ষিত:
অন্য ফার্স্ট লেডিদের মতো যখন তখন জনসম্মুখে আসা রি সোল জুর জন্য নিষিদ্ধ। সব সময় স্বামীর সঙ্গে দেখা যায় তাকে। এমনকি তার সন্তানরাও জনসম্মুখে আসতে পারেন না। এজন্য তথ্য প্রযুক্তির এই যুগেও উনের সন্তানদের কোনো ছবি প্রকাশ্যে আসেনি।
কোনো অনুষ্ঠানে উপস্থিত হওয়া নিষিদ্ধ:
জনসম্মুখে কোনো অনুষ্ঠানে উপস্থিত হওয়া রি সোল জুর জন্য নিষিদ্ধ। জনহিতৈষী কোনো কাজের জন্যও তিনি প্রকাশ্যে আসতে পারেন না।
অনুমতি ছাড়া পত্রিকায় ছবি ছাপা যাবে না:
তারকা ও বিশেষ ব্যক্তিদের ছবি পত্রিকায় অহরহ দেখা যায়। কিন্তু কিম জং উনের সরাসরি নিদের্শ ছাড়া রি সোল জুর ছবি কোনো ফটোসাংবাদিক তুলতে পারবে না।
বিদেশ যাত্রায় নিষেধাজ্ঞা:
উত্তর কোরিয়া ছাড়তে পারবেন না রি সোল জু। কিন্তু বিশ্বের বড় কোনো নেতার মৃত্যু হলে শেষকৃত্য অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পারবেন। তবে এ ক্ষেত্রেও স্বামীর সঙ্গে যাবেন তিনি। যদিও বিয়ের আগে দেশের বাইরে গিয়েছেন রি সোল জু। জানা যায়, তিনি চীনে পড়াশোনা করেছেন। এমনকি চিয়ারলিডার হিসেবে পাশের দেশ দক্ষিণ কোরিয়াতেও গিয়েছেন।
অন্তঃসত্ত্বা খবর গোপন করতে বাধ্য করা:
উন পরিবারের কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে থাকতে হয় রি সোল জুকে। অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার পর তার এই নিরাপত্তা আরো বাড়িয়ে দেওয়া হয়। কয়েকমাস তিনি আড়ালেই চলে গিয়েছিলেন।
ছেলে সন্তানের জন্য চাপ:
রি সোল জু ২০০৯ সালে কিম জং উনকে বিয়ে করেন। পরের বছরই তাদের প্রথম সন্তানের জন্ম হয়। এরপর আরো দুই সন্তান নিতে হয় তাকে। কারণ প্রথম দুই সন্তান ছিল মেয়ে। ছেলে না হওয়া পর্যন্ত তাকে সন্তান নিতে চাপ দেওয়া হয়।