লন্ডন থেকে পালিয়ে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটে (আইএস) যোগ দিতে সিরিয়ায় যাওয়া আরেক বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত তরুণীর সন্ধান পাওয়া গেছে। শারমিনা বেগম নামের ওই তরুণী বর্তমানে সিরিয়াতেই আছেন এবং তিনি আইএসের পক্ষে তহবিল সংগ্রহ করছেন। বুধবার বিবিসি এ তথ্য জানিয়েছে।
২০১৫ সালে যুক্তরাজ্যের পূর্ব লন্ডনের বেথনাল গ্রিন একাডেমির শিক্ষার্থী ১৫ বছর বয়সী শামীমা বেগম ও আমিরা আবাসি এবং ১৫ বছর বয়সী খাদিজা সুলতানা গোপনে সিরিয়ায় যান। তাদের তিন মাস আগে একই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শারমিনা বেগম সিরিয়ায় পাড়ি দিয়েছিলেন। শারমিনার সঙ্গে যোগাযোগের সূত্র ধরেই শামীমা, আমিরা ও খাদিজা সিরিয়ায় পাড়ি দেন বলে ধারণা করা হচ্ছিল। শামীমা বেগম, খাদিজা সুলতানা ও শারমিনা বেগম—এই তিনজন বাংলাদেশি পরিবারের সন্তান।
২০১৯ সালে আইএসের পতনের পর সিরিয়ার একটি বন্দিশিবিরে শামীমার সন্ধান মেলে। ওই সময় সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে শামীমা জানিয়েছিলেন, আইএসে যোগ দেওয়ার ব্যাপারে তাদের মগজ ধোলাই করেছিলেন শারমিনা।
সিরিয়ায় যাওয়ার পর শারমিনার কোনো হদিস পাওয়া যায়নি। বিবিসি পডকাস্টে ‘দ্য শামিমা বেগম’স স্টোরি’ শিরোনামের প্রতিবেদনের জন্য যেসব সাংবাদিক কাজ করেছেন তাদের মধ্যে এক জন সম্প্রতি শারমিনার হদিস পেয়েছেন। তিনি ক্যাম্প হল কারাগার থেকে পালিয়ে সিরিয়াতেই ভিন্ন পরিচয়ে বসবাস করছেন। শুধু তা-ই নয়, তিনি এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেশ সক্রিয় এবং আইএসের জন্য তহবিল সংগ্রহ করছেন।
শারমিনা আইএসের জন্য কী পরিমাণ অর্থ সংগ্রহ করেছেন তা স্পষ্ট নয়। তবে একটি বিটকয়েন অ্যাকাউন্টে মোট তিন হাজার ডলার ২৯টি লেনদেনে জমা হয়েছে। কেন তিনি সন্ত্রাসীদের জন্য অর্থ সংগ্রহ করছেন তা নিয়ে অনলাইনে প্রশ্ন করা হলে, শারমিনা দাবি করেছেন, তিনি ‘শুধুমাত্র দরিদ্র মহিলা এবং শিশুদের খাওয়াচ্ছেন এবং পোশাক দিচ্ছেন।’
বিবিসি শারমিনার কাছে জানতে চেয়েছিল, তিনি সন্ত্রাসী গোষ্ঠীতে যোগদানের জন্য অনুতপ্ত কিনা। শারমিনা প্রশ্নটি এড়িয়ে গিয়ে বলেছেন, তিনি ব্রিটেনে ফিরে যেতে চান না এবং জেলে যেতে চান না।
সাবেক বন্ধু শামীমা বেগম সম্পর্কে শারমিনা বলেছেন, সে ‘অবিশ্বাসী’ এবং ‘সুবিধাভোগী।’