সম্পর্ক ডেস্ক: বৃহস্পতিবার (১১ জুন) ২০২০-২১ অর্থ বছরের বাজেট ঘোষণায়, ‘শিশু কল্যাণ নিশ্চিত করতে শিশু অধিদফতর প্রতিষ্ঠা, সকল জেলায় শিশু কমপ্লেক্স নির্মাণ এবং সকল উপজেলায় শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র স্থাপনের পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।’ শিশু কল্যাণ নিশ্চিত করার লক্ষে এবারের বাজেট বক্তব্যে শিশু অধিদফতর প্রতিষ্ঠার বিষয়ে পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
সেভ দ্য চিলড্রেন এর পরিচালক, সিআরজি বাজেট ঘোষণা পরবর্তী এক প্রতিক্রিয়ায় জানান, শিশুদের জন্য পৃথক বিভাগ গঠনের জন্য দীর্ঘদিন ধরে জাতিসংঘ শিশু অধিকার কমিটি, সেভ দ্য চিলড্রেন, শিশু অধিকার ফোরা্ম, স্ক্যান বাংলাদেশ সহ শিশু অধিকার সংগঠনগুলো দীর্ঘদিন ধরে এডভোকেসী কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে।
শিশু অধিদফতর বাস্তবায়ন পরিকল্পনা্র ঘোষণায় সরকারের এই উদ্যোগকে শিশু অধিকার উন্নয়নকর্মীরা সাধুবাদ জানান। আগামী অর্থ বছরের মধ্যে একটি কার্যকর শিশু অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠিত হবে বলে উন্নয়ন কর্মীরা আশাবাদ ব্যক্ত করেন। উন্নয়নকর্মীরা মনে করেন,শিশু অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে পরিচালিত শিশু সুরক্ষা ও উন্নয়নমুলক কার্যক্রমের একটি সমন্বয় দেখা যাবে।
এবারের বাজেটে উপজেলা পর্যায়ে শিশুদের জন্য ডে কেয়ার সেন্টার স্থাপনের উদ্যোগটি কর্মজীবী মায়েদের সন্তানকে সুরক্ষা ও বিকাশে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখবে। ডে কেয়ার পরিচালনার ক্ষেত্রে শিশুদের সর্বোত্তম স্বার্থ নিশ্চিত করে গুণগত মান ধরে রাখা হবে একটি বড় চ্যালেঞ্জ। এই ক্ষেত্রে বেসরকারি সংগঠনগুলোর দক্ষতা ও অভিজ্ঞতাকে সরকার কাজে লাগাতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা ম‡ন করেন। মিসেস মাটিল্ডা টিনা, কেএনএইচ জার্মানী – বাংলাদেশ থেকে বলেন,আমরা আশা করি এই বাজেট প্রেক্ষিতে যখন কর্মসূচি নেয়া হবে তখন কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে শিশুরা যেন সকল ধরনের শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন থেকে সুরক্ষিত থাকে, স্কুল থেকে ঝরে না পড়ে, শিশু শ্রমে যুক্ত না হয়, বাল্যবিয়ের শিকার না হয় এই বিষয়গুলো মাথায় রাখবে। এছাড়া সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের জন্য বিশেষ সামাজিক নিরাপত্তার আর্থিক পরিকল্পনা করবে।শিশু অধিকার কর্মী শেখ ফরিদ বলেন,কভিড ১৯ পরবর্তী পরিস্থিতিতে স্কুলগামী শিশু কমে যেতে পারে, কর্মসংস্থান কমে যাবে। ছোট এবং মাঝারী ব্যবসায়ীরা সস্তা শ্রম খুজবেন আর এতে করে শিশুশ্রম বৃদ্ধির আশংকা থেকে যাচ্ছে। এদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য স্থানীয় সরকারের কার্যক্রমকে আরো জোরদার করতে হতদরিদ্র দুস্থ পরিবারকে প্রশিক্ষণ ও সহজ শর্তে ঋণ প্রদান কার্যক্রমকে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে শক্তিশালী করা আবশ্যক।অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে ৯৫% শিশুশ্রমে যুক্ত রয়েছে।
গবেষনা তথ্যে, পথশিশুদের সংখ্যা শুধু ঢাকা শহরেই ৪-৫ লাখের মত। সারা দেশে ১৩ লাখ বলা হয়ে থাকে। এদের অধিকাংশ ৩৮ ধরনের ঝুকিপুর্ণ কাজের সাথে যুক্ত। শিশুশ্রম মাত্র ৫% প্রাতিষ্ঠানিক খাতের শিশুশ্রম নিয়ে সরকারি মনিটরিং হলেও সেটি কতটুকু কার্যকর এ নিয়েও অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন। শিশুশ্রম নিয়ে পথশিশু বিষয়ক নেটওয়ার্ক স্ক্যান বাংলাদেশের সভাপতি জাহাংগীর নাকির এবিষয়ে সরকারের সুনির্দিষ্ট সহায়তা ও দিকনির্দেশনা থাকা জরুরি বলে মনে করেন। তিনি আরো বলেন, শিশু সুরক্ষায় সামাজিক নিরাপত্তায় নিয়মিত যে কাজগুলো করা হয় সেটা যেমন থাকবে, তেমনি করোনার মতো বিশেষ পরিস্থিতি সামাল দিতে বাড়তি প্রণোদনাও দরকার।