মানবাধিকার সংস্থা থেকে বহিষ্কার রাশিয়া, ভোট দেয়নি বাংলাদেশ
জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থা থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে রাশিয়াকে। ইউক্রেনে ‘নৃশংসতা’ চালানোর অভিযোগে এই পদক্ষেপ নিল বৈশ্বিক এই সংস্থাটি। সাধারণ পরিষদে বৃহস্পতিবার (৭ এপ্রিল) বাংলাদেশ সময় রাতে হয় এই ভোটাভুটি।
নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দপ্তরে বৃহস্পতিবার এক সংক্ষিপ্ত রেজোলিউশনে ইউক্রেনে চলমান মানবাধিকার এবং মানবিক সংকটের প্রতি গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। এতে বলা হয়েছে, রাশিয়ান ফেডারেশন ইউক্রেনে মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে। তাই মানবাধিকার সংস্থায় তাদের থাকা উচিত নয়।
সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে বিপক্ষে ভোট দেওয়া দেশগুলোর মধ্যে আছে চীন, ইরান, কাজাখিস্তান, কিউবা, বেলারুশ, সিরিয়া এবং খোদ রাশিয়া।
মানবাধিকার সংস্থা থেকে বহিষ্কারের ঘটনা বিরল। সবশেষ ২০১১ সালে আফ্রিকার দেশ লিবিয়াকে বহিষ্কার করা হয়েছিল এই সংস্থা থেকে।
ভোটের আগে রাশিয়া অবশ্য সব সদস্য দেশকেই সতর্ক করেছিল। বলেছিল, তাদের সিদ্ধান্ত প্রভাব ফেলবে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে, বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ রাজনৈতিক।
সাধারণ পরিষদে প্রস্তাবটির পক্ষে ৯৩ ভোট পড়ে। বিপক্ষে পড়েছে ২৪ ভোট। তবে এবার রেকর্ড সংখ্যক ৫৮টি সদস্য দেশ ভোট দান থেকে বিরত থাকে। তবে ভোটদানে বিরত থাকা দেশগুলোর ভোট চূড়ান্ত গণনা থেকে বাদ যাওয়ায় ভোটাভুটিতে অংশ নেওয়া সদস্য দেশগুলোর দুই তৃতীয়াংশের বেশি ভোটে প্রস্তাবটি পাস হয়।
জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার ইস্যুতে তৃতীয়বারের মতো সাধারণ পরিষদে ভোটাভুটি হলো। সবশেষ বাংলাদেশ মানবাধিকার রক্ষায় ইউক্রেনের একটি প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয়। তবে এবার বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তানসহ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো ভোটদানে বিরত ছিল।
রাশিয়া জাতিসংঘের প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য এবং নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচটি স্থায়ী সদস্যের মধ্যে একটি। সেই দেশকে জাতিসংঘের একটি সংস্থার সদস্যপদ স্থগিতের প্রস্তাব সাধারণ পরিষদে পাস হওয়াকে আন্তর্জাতিকভাবে খুব গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে।
তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় ইউক্রেন এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্রো কুলেবা লিখেছেন, মানবাধিকার রক্ষায় যুদ্ধাপরাধীদের কোনো স্থান জাতিসংঘে নেই। সাধারণ পরিষদে যারা এই প্রস্তাবকে সমর্থন করেছেন এবং ইতিহাসে সঠিক পক্ষ বেছে নিয়েছেন তাদের প্রতি বিশেষ কৃতজ্ঞতা।
অপরদিকে, রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্রি পেসকভ ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম স্কাই নিউজকে বলেন, ‘এই ঘটনায় আমরা দুঃখিত।’ একইসঙ্গে আন্তর্জাতিক ফোরামে নিজেদের স্বার্থ রক্ষায় সম্ভাব্য সকল বৈধ পন্থা অবলম্বন করবে।